২০১৮ সালের ১৩ জুলাই। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিনের প্রচেষ্টায় যাত্রা শুরু করে '১/২৪ সোশ্যাল মুভমেন্ট'।

শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, দারিদ্র্য এবং যুব উন্নয়নকে অগ্রাধিকার প্রদান করে সাফল্যের সঙ্গে দুই বছর পার করেছে সংগঠনটি। করোনাকালেও থামেনি সংগঠনটির কার্যক্রম। করোনাভাইরাসের শুরু থেকেই ১/২৪ সোশ্যাল মুভমেন্ট কার্যকর পদক্ষেপ নেয়।

শুরুতেই প্রায় ৫০০ জন পথচারী, রিকশাচালক এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারকে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবান বিতরণের পাশাপাশি ২২০টি পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী প্রদান করে সংগঠনটি।

যত কাজে ১/২৪ সোশ্যাল মুভমেন্ট

দুই বছর সময়কালে সংগঠনের কাজের ফিরিস্তি কম নয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলোচিত আশ্রয়হীন শিশু সুখীর বাড়ি নির্মাণের পাশাপাশি তার মাকে সেলাই মেশিন প্রদানসহ পুরো পরিবারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। দারিদ্রতা ঘুচিয়ে স্বাবলম্বী করে তুলতে ১/২৪ সোশ্যাল মুভমেন্ট এ পর্যন্ত ৪ জন বিধবা ও অসহায় নারীকে সেলাই মেশিন প্রদান এবং এক বৃদ্ধকে রিকশা হস্তান্তর করেছে।

স্বপ্নবাজ শিশু-কিশোরদের পড়াশোনার ব্যয়ভার বহন করে সংগঠনটি। ৮ জন ছাত্রছাত্রীকে স্কুলে ভর্তিসহ টিউশন ফির দায়িত্ব নিয়েছে তারা। এছাড়া ১২০ জন ছাত্রের হাতে বছরের শুরুতে এক বছরের শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ করেছে তারা।

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে এই সংগঠন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে গাছগুলোর গায়ে লাগানো পেরেক উঠানো ছাড়াও চট্টগ্রাম বিভাগজুড়ে গত বছর ৩৯ হাজার ৩০০টি চারাগাছ রোপণ করেছে ১/২৪ সোশ্যাল মুভমেন্ট।

নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা অভিযানের পাশাপাশি দুই বছর ধরে বিশ্ব প্রাণী দিবস পালন করে আসছে সংগঠনটি। এছাড়াও আমাজনের বন উজাড়ের প্রতিবাদে মানববন্ধন থেকে শুরু করে পরিবেশ এবং বন্য পশুদের অধিকার নিয়ে সক্রিয় থেকেছে সংগঠনটি। বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যৌথভাবে বনায়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির পাশাপাশি চবি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কাছে গাছে পানি দেওয়ার ট্রলি প্রদান করেছে।

এছাড়াও প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই বার্ষিক ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন করে আসছে। যার ধারাবাহিকতায় এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ভাষাশহীদদের স্মৃতিতে সন্দ্বীপে ৫ জন ডাক্তার এবং ৩ জন ভেটেরিনারি স্পেশালিস্টের সমন্বয়ে ক্যাম্প পরিচালনার মাধ্যমে প্রায় ৫১১ জনকে ফ্রি চিকিৎসা সেবা, প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং ৫০টি পশুপাখিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এছাড়া ফ্রি ব্লাড ক্যাম্প ও সদস্যরা নিয়মিত রক্তদান করে আসছেন।

নতুন দিনের স্বপ্ন

দেশে বিশ্বমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করতে চায় সংগঠনটি। বিশেষ করে দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করাই উদ্দেশ্য। এছাড়া হাসপাতাল বানানোর ইচ্ছাও রয়েছে তাদের। দেশের বিশাল এবং সম্ভাবনাময় অংশ তরুণদের নিয়ে ভিন্নধর্মী কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সেজন্য সংগঠনের 'এইচআরএম' বিভাগ গঠন করা হয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে জনশক্তিতে রূপান্তর করতেই এমন প্রয়াস।

উদ্যোক্তার কণ্ঠে

মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন বলেন, আমরা মূলত শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ এ তিনটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। দারিদ্রমুক্ত সুন্দর সবুজ সমাজের স্বপ্ন থেকেই আমাদের সংগঠনের প্রতিষ্ঠা।' া

মন্তব্য করুন