মাত্র দুই দিনের জন্য দিনাজপুরের ফুলবাড়ী রেলস্টেশনে এসেছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর। মঙ্গলবার সেখানে আসা জাদুঘরটি চলে যায় গতকাল বুধবার সন্ধ্যায়। এ নিয়ে আক্ষেপ করছেন দর্শনার্থীরা। ওই জাদুঘরের নানা স্থানে বানান ভুলের কারণে বিভ্রান্ত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। এ ছাড়া অনেকেই জাদুঘরটি আসার সংবাদ পাননি। এতে জনসমাগমও আশানুরূপ হয়নি।
গতকাল বুধবার সকালে ফুলবাড়ী রেলস্টেশনের তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে দেখা যায়, ওই জাদুঘরটি দেখতে এসেছেন বেশ কিছু দর্শনার্থী। উপজেলার বেতদীঘি ইউনিয়নের মহেশপুর থেকে আসা সহকারী প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন জানান, শহরে একটি কাজে বিশেষ এই ট্রেনের আসার কথা জানতে পারেন। তিনি বলেন, 'ভেতরে গিয়ে দেখলাম, খুব ভালো লাগল। পরিবারের সদস্য, স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসতে পারলে ভালো হতো। তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারত।'
দৃষ্টিনন্দন কোচটির গায়ে বড় অক্ষরে লেখা রয়েছে 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমান রেল জাদুঘর।' ভ্রাম্যমাণ বানানটিও দেখা যায় ভুল। এ ছাড়া বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, সত্তরের নির্বাচন, বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারসহ একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধ জয়ের নানা চিত্র অঙ্কিত রয়েছে বাইরে।
ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, বাঙালি শব্দটির স্থলে লেখা রয়েছে 'বাঙ্গালী'। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের 'ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো' বাক্যে লেখা রয়েছে 'দূর্গো'। এসব বানানের কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অনেকেই বিভ্রান্তির কথা জানান।
ভেতরে দুই পাশে মনিটর রয়েছে ১২টি।
এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নানা ঐতিহাসিক ঘটনার ভিডিওচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে। হেডফোন কানে নিয়ে শোনা যাচ্ছে ধারাবর্ণনাও। সেখানে এক পাশে ১৯২০-১৯২৭, ১৯২৮-১৯৪২, ১৯৪৩-১৯৪৮, ১৯৪৯-১৯৫২, ১৯৫৩-১৯৫৪, ১৯৫৫-১৯৫৮ সালের ঘটনাক্রম রয়েছে। অন্য পাশে রয়েছে ১৯৬১-১৯৬৫, ১৯৬৬-১৯৬৮, ১৯৬৯-১৯৭০, ১৯৭১, ১৯৭২-১৯৭৪ ও ১৯৭৫ সালের ঘটনার ধারাবাহিক বর্ণনা।
ফুলবাড়ী স্টেশন মাস্টার খায়রুল ইসলাম বলেন, জাদুঘরটির সার্বিক দেখভাল করতে তাঁদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দর্শনার্থীদের আগ্রহ তৈরির জন্য স্টেশনে ট্রেন আসার সময় মাইকিং করা হয়েছে। এত অল্প সময়ের জন্য কেন আনা হলো- জানতে চাইলে বলেন, সময় বাড়াতে হলে আগে থেকেই যোগাযোগ করতে হতো।
পাশের বিরামপুর স্টেশন মাস্টার মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, তাঁর স্টেশনে জাদুঘরের এক সপ্তাহ থাকার কথা শুনেছেন।

বিষয় : ফুলবাড়ী রেলস্টেশন ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর

মন্তব্য করুন