- বিজয় দিবস
- আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে নিষেধাজ্ঞা হাইকোর্টের
নেত্রকোনার বলাইশিমুল মাঠ
আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে নিষেধাজ্ঞা হাইকোর্টের

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় বলাইশিমুল ইউনিয়নের ঐতিহাসিক খেলার মাঠে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহারের আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট। স্থানীয় জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সরকারের ১৪টি সংস্থাকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দু কুমার রায়। তিনি শুনানিতে বলেন, বলাইশিমুল মাঠে সরকারের প্রস্তাবিত ৩৬টি ঘরের পরিবর্তে শুধু নির্মিতব্য ১২টি ঘরই থাকবে। তখন আদালত বলেন, মাঠের জমি নিয়ে নিম্ন আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় জমির শ্রেণির পরিবর্তন ক্ষমতার অপব্যবহার। হাইকোর্টে বেলার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি জানান, মাঠ রক্ষায় স্থানীয়রা নিম্ন আদালতে মামলা করেছিল। কিন্তু আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্মাণকাজ বন্ধ করা হয়নি। পরে স্থানীয়রা সহযোগিতা চাইলে নিম্ন আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে বেলার পক্ষে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। হাইকোর্ট বলাইশিমুল মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন।
এদিকে, আমাদের কেন্দুয়া প্রতিনিধি জানান, বলাইশিমুল মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং মাঠ রক্ষা নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এরই মধ্যে উপজেলা প্রশাসন ১২টি ঘর নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ করেছে। তবে ওই মাঠ রক্ষার দাবিতে স্থানীয় আন্দোলনকারীরা ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাব ও শাহবাগ, ময়মনসিংহ প্রেস ক্লাব ও মাঠ প্রাঙ্গণে দফায় দফায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে আসছে। উপজেলা প্রশাসন ও মাঠ রক্ষা আন্দোলনকারীরা যার যার অবস্থানে অনঢ়।
এর আগে গত শুক্রবার ভোর রাতে আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্মাণাধীন ৭ ও ৮ নম্বর ঘরে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুনে টিন ও কাঠ পুড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়। গতকাল দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন ময়মনসিংহের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) এস. এ. এম রফিকুন্নবী। এদিকে আগুন লাগানোর ঘটনায় ২০ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা আরও চরম আকার ধারণ করেছে। এ পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পে গত ২ জুন ভাঙচুর চালিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। তখন ওই ঘটনায় ৪০ জনকে আসামি করে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা বেগম জানান, ওই মাঠের পরিমাণ ১ দশমিক ৮৭ একর। এর মধ্যে ৭৬ শতাংশ জমি বেদখল ছিল। প্রশাসনের মাধ্যমে ওই জমি উদ্ধার করে ৪৬ শতাংশ জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে ওই জমিতে ২৩টি ঘর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। তবে মাঠের সৌন্দর্য রক্ষায় এখন ১২টি ঘর নির্মাণ করা হবে। মাঠ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়কারী আবুল কালাম আল আজাদ তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, মাঠ রক্ষা আন্দোলনকারীদের হেনস্তা করতেই পরিকল্পিতভাবে ভাঙচুর ও আগুন দিয়ে নিরীহ ও শান্তিপ্রিয় লোকদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তিনি মাঠ রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মন্তব্য করুন