বর্ষবরণ ঘিরে যশোরে সাজসাজ রব

মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি
যশোর অফিস
প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২২ | ০৮:১০ | আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২২ | ০৮:১০
করোনা মহামারির কারণে অনাড়ম্বর দুটি বৈশাখ কাটানোর পর বাংলা নববর্ষ আয়োজনকে ঘিরে প্রাণের ছোঁয়া লেগেছে মঙ্গল শোভাযাত্রার পীঠস্থান যশোরে। শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার সাংস্কৃতিক কর্মীরা। বর্ণিল উৎসব ঘিরে জেলার সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো তৈরি করেছে ভিন্ন আঙ্গিকের দাওয়াতপত্রও।
বাংলা বর্ষবরণে যশোরের ঐতিহ্য চার দশকের বেশি। করোনা সংক্রমণের কারণে গত দুই বছর নববর্ষের উৎসব ছিল অনেকটা ঘরবন্দি। এবার সংক্রমণ কমায় প্রাণোচ্ছল হয়ে উঠেছে জেলার সংস্কৃতি অঙ্গনে। পহেলা বৈশাখে বর্ণিল সাজে ঢাক-ঢোলের বাদ্যে মাততে প্রস্তুত হচ্ছে সংগঠনগুলো। বরাবরের মতো এবারও পহেলা বৈশাখে জেলার ঐতিহাসিক টাউন হল ময়দান থেকে সকাল ৯টায় বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হবে। রমজানের কারণে দুপুরের মধ্যেই সব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ হবে।
যশোরের ২৫টির বেশি সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রায় ৫০০ সাংস্কৃতিক কর্মী উৎসবকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। উদীচী, পুনশ্চ, তীর্যক, চাঁদের হাটসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনে চলছে গান, নাচ, নাটক ও গীতিনাট্যের মহড়া। মঙ্গল শোভাযাত্রার নৌকা, দোয়েল, কচ্ছপ, বড় আকৃতির সাপ, কুমির, বাঘ, পুতুলসহ নানা রঙের মুখোশ তৈরিতে ব্যস্ত চারুশিল্পীরা। জেলার চারুপীঠ আট রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং চারুতীর্থের শিল্পীদের তুলির রঙিন আঁচড়ে জীবন্ত হয়ে উঠছে শোভাযাত্রার এসব অনুসঙ্গ।
সংগঠন দুটির কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, গভীর মনোযোগে কেউ জলরঙের ছবি আঁকছেন, কেউ নকশা করছেন কাগজে। অনেকে মিলে বাঁশ দিয়ে তৈরি করছেন বিশাল আকৃতির পুতুল। কাগজ কেটে ফুল, প্যাঁচা, পাখপাখালি গড়ছেন কেউ। বিভিন্ন মুখোশে দেওয়া হচ্ছে রঙের পরশ।
চারুপীঠের সদস্য ওবায়েত ইসলাম রাসু জানান, সাত দিন ধরে শোভাযাত্রার নানান অনুসঙ্গ তৈরি করছেন। গত দুই বছর নববর্ষের অনুষ্ঠান না হওয়ায় আগের অনেক অনুসঙ্গ নষ্ট হয়ে গেছে। এবার সব নতুনভাবে তৈরি করতে বেশি সময় দিতে হচ্ছে।
চারুপীঠের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ বলেন, দেশে মঙ্গল শোভাযাত্রার সূচনা হয় ১৯৮৫ সালে যশোরে। সেই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মাহবুব জামাল শামীম দুই সহপাঠীকে নিয়ে যশোরে প্রতিষ্ঠা করেন চারুপীঠ। এই প্রতিষ্ঠানই মঙ্গল শোভাযাত্রার সূতিকাগার। এর চার বছর পরই ঢাকায় মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়, যা পরে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পায়।
যশোরে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার আলম খান দুলু বলেন, গত দুই বছর বাঙালির সার্বজনীন উৎসবটিতে কোন আয়োজন ছিল। এবার ঐতিহ্যকে মননে রেখে বর্ষবরণে পূর্ণ প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
উদীচী যশোরের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান খান বিপ্লব জানান, 'নতুন আশা-নতুন প্রাণ, নতুন বছর- নতুন গান' শীর্ষক এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে যশোরবাসীকে উৎসবের আনন্দে মাতাবেন তারা। বরাবরের মতো এ বছরও আমন্ত্রণপত্রে আনা হয়েছে নতুনত্ব।
- বিষয় :
- বৈশাখ
- বাংলা নববর্ষ
- ঙ্গল শোভাযাত্রা
- খুলনা
- যশোর