চলছে লোহাখনির অনুসন্ধান
দিনাজপুরে কঠিন শিলা পাওয়ায় আশাবাদী জিএসবি
দিনাজপুর ও পার্বতীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ মে ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ১২ মে ২০২২ | ২২:৫৮
দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলায় নতুন একটি লোহার খনির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে কূপ খনন কার্যক্রম শুরু করে প্রাথমিকভাবে হার্ড রক বা কঠিন শিলা পেয়েছে বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (জিএসবি)। খনন কার্যক্রম উদ্বোধনের দেড় মাস পর ৯৫৮ ফুট কূপ খননে এই কঠিন শিলা মেলার পর উজ্জ্বল হয়েছে লোহা পাওয়ার সম্ভাবনা।
উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর মৌজায় গত ২৫ মার্চ এ খনির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে কূপ খনন কার্যক্রম শুরু করে জিএসবির একটি দল। এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জিএসবির মহাপরিচালক আব্দুল বাকী খান মজলিশ।
খননস্থানে গিয়ে দেখা যায়, সংরক্ষিত এলাকায় একটি ট্রেতে ভূগর্ভ থেকে পাওয়া কঠিন শিলা রোদে শুকানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে এখানে এক হাজার ফুটেরও বেশি পর্যন্ত ড্রিলিং করা সম্ভব হয়েছে। এখানে ১৫শ থেকে ২ হাজার ফুট পর্যন্ত ড্রিলিং করা হবে। প্রয়োজনে তা আরও বাড়তে পারে। খনির কূপ খননকারীরা এখানে লোহার খনি পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। যদিও খনন কার্যক্রমে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ বিষয়ে এখন কোনো কথা বলছেন না। কর্মকর্তারা বলছেন, সব তথ্যের জন্য জিএসবিতে যোগাযোগ করতে হবে।
খনির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ভূগর্ভ থেকে যেসব পদার্থ পাওয়া গেছে সেগুলোকে হার্ডরক বা কঠিন শিলা বলা হচ্ছে। কঠিন শিলা পাওয়ার অর্থ, এখানে পাথর এবং লোহা থাকতে পারে। এতে অনুমান করা যাচ্ছে, এখানে লোহার খনি থাকতে পারে।
খনির আরেকটি সূত্র জানাচ্ছে, কুতুবপুর মৌজার ইছামতী নদীর কোলঘেঁষা নতুন এ খনির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে দেখা গেছে, লোহার কাঁচামাল আকরিকের পুরুত্ব অনেক বেশি, যা লোহা, তামাসহ বিভিন্ন মূল্যবান সম্পদ পাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
গত ২৫ মার্চ কূপ খনন কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের পরিচালক আলী আকবর একই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তখন ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আব্দুল বাকী খান মজলিশ বলেছিলেন, বাংলাদেশ খনিসমৃদ্ধ দেশ নয়। তাই এদেশে খনিজসম্পদ থাকার সম্ভাবনা কম। তবে জিএসবির কাজ আশা ও সম্ভাবনা সামনে রেখে খনির সম্ভাব্যতা যাচাই করা, যাতে সম্ভাবনা যত কমই হোক; অর্জনের প্রক্রিয়া যেন অব্যাহত থাকে।
এর আগে ২০২১ সালের ২ এপ্রিল দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার পুনট্টি ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে একটি খনির সন্ধানে ড্রিলিং (খনন) কার্যক্রম হয়। তবে সেখানে কী পাওয়া গিয়েছিল, তা না জানিয়েই কাজের সমাপ্তি ঘোষণা করে জিএসবি। এর আগে গত ২০১৯ সালের ২৬ মে হাকিমপুর উপজেলার হিলিতে একটি লোহার খনি আবিস্কার করে জিএসবি।
শেষ পর্যন্ত এখানে লোহার খনির অস্তিত্ব নিশ্চিত হলে এ জেলায় খনির সংখ্যা দাঁড়াবে ৬-এ। এর আগে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি, দীঘিপাড়া কয়লা খনি, ফুলবাড়ী কয়লা খনি, মধ্যপাড়া পাথর খনি ও হিলিতে লোহার খনি আবিস্কার করে জিএসবি। এর মধ্যে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি ও মধ্যপাড়া পাথর খনি থেকে উত্তোলন কার্যক্রম চলছে।
- বিষয় :
- লোহার খনি