উৎপাদন খরচের চেয়েও কম ধানের দর, হতাশ কৃষক

ফাইল ছবি
বানিয়াচং (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ মে ২০২২ | ০৫:২১ | আপডেট: ১৩ মে ২০২২ | ০৫:২১
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে বোরো ধানের বাজার দর উৎপাদন খরচের চেয়েও অনেক কম। এতে কৃষকদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। কৃষকরা বলছেন, প্রতি মণ ধানের উৎপাদন খরচ পড়েছে সাড়ে ৮০০ টাকার উপরে। কিন্তু আড়তদাররা কিনছেন সাড়ে ৬০০ থেকে ৬৭০ টাকা মণ।
গত ৮ মে থেকে এক হাজার ৮০ টাকা দরে সরকারের ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হলেও ইউনিয়ন পর্যায়ে ক্রয়কেন্দ্র না খোলা এবং কৃষকদের কাছ থেকে গণহারে ধান কেনার পদক্ষেপ না নেওয়ায় উপজেলাটির হাজার হাজার কৃষক সরকারের এ সুবিধা থেকে বরাবরের মতোই বঞ্চিত হচ্ছেন। এই হতাশা থেকে ধান চাষে দিন দিন আগ্রহ হারাচ্ছেন তারা।
নন্দীপাড়া গ্রামের কৃষক গিয়াস উদ্দিন জানান, ঈদের আগে তিনি মোটা ধান বিক্রির জন্য আড়তদারদের কাছে গিয়েছিলেন। তখন ধানের বাজার দর ছিল সাড়ে ৬০০ টাকা মণ। এত কম দর হওয়ায় ধান বিক্রি করেননি এবং এ কারণে পরিবারের কারও জন্য ঈদের পোশাকও কিনতে পারেনি।
ঈদের এক সপ্তাহ পর আড়তদারদের কাছে পুনরায় যোগাযোগ করেন তিনি। তখন বলা হয় ৬৭০ টাকা দর। কিন্তু উৎপাদন খরচের চেয়েও কম হওয়ায় লোকসান হবে ভেবে তিনি এই ধান বিক্রি করতে পারেননি।
দরগাহ মহল্লার আরেক কৃষক আবু তাহের বলেন, আমরা কৃষকরা যদি ধানের ন্যায্য দাম না পাই তাহলে কী করে সংসার চালাব। এত কষ্ট করে লোকসান দিই কী করে।
সরকারি ধান সংগ্রহের ব্যাপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক খবির আহমেদ বলেন, এবার ২৭ টাকা কেজি করে প্রতি মণ ধানের মূল্য এক হাজার ৮০ টাকা দরে বানিয়াচং উপজেলায় চার হাজার ৫৯০ মেট্রিক টন বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কৃষকদের অনলাইনে নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে আহ্বান জানানো হয়েছিল। এতে ছয় হাজার কৃষক নিবন্ধন করেন। এরমধ্যে লটারি করে এক হাজার ৫৩০ জন কৃষককে নিয়ে চূড়ান্ত তালিকা করা হয়।
তারা জনপ্রতি তিন মেট্রিক টন করে শুকনো ধান উপজেলা খাদ্য গুদামে বিক্রি করতে পারবেন। ৮ মে থেকে কেনা শুরু হয়েছে এবং ১১ মে পর্যন্ত ১২ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদ্মাসন সিংহ বলেন, আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ধান সংগ্রহের সময়সীমা রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।