সিটি কলেজ ছাত্রসংসদের কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট

চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রসংসদের নতুন কমিটি স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে কলেজের অধ্যক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে এই আদেশ পৌঁছে। হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের এবং বিচারপতি জাকির হোসেন তিন মাসের জন্য এই স্থগিতাদেশ দেন।

নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের মাধ্যমেই ছাত্রসংসদ গঠন করতে হয়। যেখানে ভোটার হবেন ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু গত ২১ জুন কলেজের অধ্যক্ষ ছাত্রসংসদের সংবিধানের দুইটি অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে অ্যাডহক কমিটি গঠন করেন। এর মাত্র দুই দিন পরেই ওই কমিটিকে ছাত্রসংসদের পূর্ণ কার্যনির্বাহী কমিটি হিসেবে স্বাক্ষর করেন। এতে অনিয়ম করে ও একপক্ষকে সুবিধা দেয়ার অভিযোগ উঠে। এর প্রতিবাদে কলেজে নানা কর্মসূচিও পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

নোটিশ দেওয়ার কথা স্বীকার করে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুদীপা দত্ত সমকালকে বলেন, ‘সব নিয়মনীতি মেনেই ছাত্রসংসদের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে হাইকোর্ট মনে করেছেন, এটা আইনসম্মত হয়নি। তাই হাইকোর্ট আমার কাছে এর জবাব চেয়েছেন। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলেছেন। আমি আইনগতভাবে জবাব দেব। এর চেয়ে বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না।’

উচ্চ আদালতে রিট আবেদনকারী সিটি কলেজের এমবিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র সাজ্জাদ হোসেন সমকালকে বলেন, ‘নিয়মনীতি অমান্য করে ও নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে অধ্যক্ষ অ্যাডহক কমিটি গঠন করেছেন। দুই দিনের মাথায় ওই কমিটিকেই ছাত্রসংসদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হিসেবে স্বাক্ষর করেন তিনি। যা ছাত্রসংসদের সংবিধান পরিপন্থি। পছন্দের মানুষদের সুযোগ করে দিতেই তিনি এমন অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন।’

জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন, তফসিল ঘোষণা, ভোটার তালিকা হালনাগাদ, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্যানেল আহ্বান করাসহ কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্নের মধ্য দিয়ে ছাত্রসংসদের নির্বাচন করতে হয়। কিন্তু অধ্যক্ষ এসব নিয়মের কোনোটাই অনুসরণ না করে সরাসরি ছাত্রসংসদ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১ ও ১২ (ঘ) অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে অ্যাডহক কমিটি গঠন করেন।

দুই দিন পর ২৩ জুন ওই অ্যাডহক কমিটিকেই ছাত্রসংসদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হিসেবে তাতে স্বাক্ষরও করেন তিনি। অধ্যক্ষ দুইটি অনুচ্ছেদের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে প্রথমে অ্যাডহক এবং পরে ছাত্রসংসদ গঠন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

উল্লেখ্য, ২১ জুন অ্যাডহক কমিটি গঠনের দিনই এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের কার্যালয় ঘেরাও করেন। দিনভর অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেন তারা। এ অবস্থায় অধ্যক্ষ পরদিন আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। পরে গত ২৬ জুলাই বিষয়টি উচ্চ আদালতের নজরে এনে রিট আবেদন করেন কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের এমবিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র সাজ্জাদ হোসেন। মঙ্গলবার কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে এই আদেশ পৌঁছে।