ঢাকা বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

রামদা শাণ দেওয়া মোফা ও শ্রাবণ হলেন চবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি

রামদা শাণ দেওয়া মোফা ও শ্রাবণ হলেন চবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি

শাহজালাল হলের তৃতীয় তলার বারান্দায় রামদায় শাণ দেন মোফা ও শ্রাবণ

চবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২২ | ১০:৩৮ | আপডেট: ০২ আগস্ট ২০২২ | ১০:৩৮

২০১৫ সালের ২ নভেম্বর। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাহজালাল হলের তৃতীয় তলার বারান্দায় রামদায় শাণ দিচ্ছিলেন মোফাজ্জল হায়দার ইবনে হোসাইন মোফা ও মিজানুর রহমান খান শ্রাবণ নামের দুই যুবক । সেদিন ভর্তি-ইচ্ছুক পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানানোকে কেন্দ্র করে চবি ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তখনকার সভাপতি আলমগীর টিপু ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বীর পক্ষের নেতা-কর্মীরা  জড়িয়ে পড়েন সংঘর্ষে। সেই সংঘর্ষে রামদা নিয়ে যোগদানের আগে সেগুলো শাণিয়ে নিচ্ছিলেন ছাত্রলীগের তৎকালীন কর্মী মোফা ও মিজান। 

সেই শাণ দেওয়ার ছবি পরদিন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের মূল আলোচনায় আসে। নিখুঁত ওই ছবি দেখে একই বছরের ৪ নভেম্বর বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তখনকার উপাচার্য ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী তার নির্বাহী ক্ষমতা বলে এই দুজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেন। কিন্তু রামদায় শাণ দিয়ে আলোচিত হওয়ার সাত বছর পর আবারও আলোচনায় এই দুই জন। 

যদিও এবার তারা আলোচনায় এসেছেন চবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়ে। মোফা ও শ্রাবণ দুজনেই পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতির পদ। তাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের প্রত্যক্ষ প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রলীগের কমিটিতে তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়া নিয়ে সমালোচনা করছেন খোদ ছাত্রলীগ নেতারাই। পদবঞ্চিতদের দুইদিনের অবরোধে উঠে এসেছে তাদের কমিটি থেকে বহিষ্কারের দাবিও। 

মোফা চারুকলা ইনস্টিটিউটের ছাত্র। তিনি টাইগার মোফা নামে ক্যাম্পাসে অধিক পরিচিত। বহিষ্কারাদেশে তাকে ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষায় অনুমতি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিক্ষুব্ধ হয়ে ৪০-৪৫ জন ছাত্রলীগের কর্মী নিয়ে পরীক্ষা বন্ধের উপক্রম করেন মোফা। অন্যদিকে শ্রাবণ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র । 

বর্তমানে তারা দুজনই ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুর অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই ঘোষিত ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তারা স্থান না পেলেও সম্প্রতি ঘোষিত কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ পান। ২০১৬ সালের চবি ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপু ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুমন ২০১৫ সালে মোফা ও শ্রাবণকে ছাত্রশিবিরের এজেন্ট বলে আখ্যা দিলেও বর্তমান সাধারণ সম্পাদকের সুনজরে ছিলেন। এখন পদ পাওয়া যেন সেই সুনজরেরও প্রমাণ। 

এদিকে রোববার মধ্যরাত থেকে নতুন কমিটিতে পদবঞ্চিতরা মোফা ও শ্রাবণের মতো বিতর্কিতদের কমিটি থেকে বহিষ্কারের দাবি নিয়ে আন্দোলন করেন। আন্দোলনকারী চবি ছাত্রলীগের গ্রুপ বিজয়ের কর্মী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, 'পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে অছাত্র , ইয়াবা ব্যবসায়ী ও জামাত-শিবিরের সহযোগিরা স্থান পেয়েছে। অথচ আমরা যারা শেখ হাসিনার জন্য কাজ করে যাচ্ছি তাদের নাম নেই। তাই কমিটি থেকে মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী ও আসামিদের বহিষ্কারের দাবিতে আমরা আন্দোলন করেছি।' 

তবে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় এই আন্দোলন প্রত্যাহার করে চবি ছাত্রলীগের একাংশ।

whatsapp follow image

আরও পড়ুন

×