চুরির অপবাদ
প্লাস দিয়ে কিশোরের চামড়া টেনে সিগারেটে পোড়ালেন মাতবর
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২২ | ০৯:৫৯ | আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২২ | ০৯:৫৯
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় চুরির অপবাদ দিয়ে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে জাকির হোসেনকে (১৪) নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মো. গোফরান মিয়া নামে এক গ্রাম্য মাতবরের বিরুদ্ধে। ছেলেদের সঙ্গে নিয়ে গোফরান প্লাস দিয়ে জাকিরের শরীরের চামড়া টেনে ধরে তাতে সিগারেটের আগুন দেন।
গত রোববার উপজেলার চররমণী ইউনিয়নের চররমণী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এর পর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চার দিন জাকিরকে আটকে রাখা হয়। প্রতিকার না পেয়ে গত বুধবার লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি (সদর) আদালতে মামলা করেন কিশোরের বাবা চররমণী মোহন গ্রামের বাসিন্দা আলমগীর হোসেন।মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন- চররমণী গ্রামের মো. গোরফান মিয়া, তাঁর ছেলে দেলোয়ার হোসেন, বাদশা মিয়ার ছেলে মনির হোসেন, আবুল কালাম ফরাজির ছেলে মনির, কালাম ভূঁইয়ার ছেলে মাকছুদ আলম ও মৃত মজিবুল হকের ছেলে শাহ আলম। বিচারক তারেক আজিজ মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত করে সদর মডেল থানার ওসিকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পবিবার নির্যাতিত কিশোরের বাবা আলমগীর হোসেন জানান, গ্রাম্য মাতবর গোরফানের কাছে তিনি ৩০ হাজার টাকা পেতেন। টাকা চাওয়ায় তাঁর সঙ্গে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এর পর থেকে প্রায়ই তাঁকে ও পরিবারের সদস্যদের হুমকি-ধমকি দিতে আসছিলেন গোফরান। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার গোফরান বাড়িতে ডেকে নিয়ে চুরির অপবাদ দিয়ে আমার ছেলেকে নির্মম নির্যাতন করেন। এর পর চিকিৎসা ছাড়াই চার দিন বাড়িতে আটকে রাখা হয়। মামলা করায় এখন গোফরান ও তাঁর লোকজন দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
নির্যাতনের শিকার জাকির হোসেন বলে, গোরফানসহ কয়েকজন চুরির অপবাদ দিয়ে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্লাস দিয়ে চামড়া টেনে ধরে সিগারেটের আগুনে ক্ষত-বিক্ষত করেন। চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসেও তাঁদের থামাতে পারেননি। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মঞ্জুর আহমেদ তিতু বলেন, 'বিষয়টি ধামাচাপা দিতে নির্যাতনের শিকার কিশোরকে হাসপাতালে পর্যন্ত আসতে দেয়নি অভিযুক্তরা। মামলা হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত আসামিরা গ্রেপ্তার হবে এবং ভুক্তভোগী ন্যায়বিচার পাবে।'
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে গোফরান মিয়া বলেন, 'অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। মামলাও সাজানো। আমাকে ফাঁসাতেই প্রতিপক্ষ এসব করছে।'
সদর মডেল থানার ওসি মোসলেহ উদ্দিন জানান, আদালতের নির্দেশে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। যথাসময়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।