ঢাকা শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা মানছে না বেসরকারি হাসপাতাল

ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা মানছে না বেসরকারি হাসপাতাল

প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২২ | ১২:০০

চট্টগ্রামে রোগীর চিকিৎসায় জাতীয় ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা মানছে না বেসরকারি হাসপাতালগুলো। ভাইরাসঘটিত রোগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভায় এসব অভিযোগ করেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। নগরে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে করণীয় নির্ধারণে এ সভার আয়োজন করা হয়।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে ১০ মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৮৯৫ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। এর মধ্যে সাতজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) মারা যান। সভায় চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, যে সাতজন মারা গেছেন, তাঁরা শেষ সময়ে চমেক হাসপাতালে আসেন এবং দুই-চার ঘণ্টার মধ্যে মারা যান। বেশিরভাগই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে এসেছিলেন। তিনি বলেন, জাতীয় ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা না মেনে প্রয়োজন অতিরিক্ত চিকিৎসা দেওয়ায় তাঁদের মৃত্যু হয়। তাঁরা যখন বোঝেন রোগীকে বাঁচানো যাবে না, তখন চমেকে পাঠান।

সভায় চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ডেঙ্গু চিকিৎসায় অবশ্যই জাতীয় ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা অনুসরণ করতে হবে। চার-পাঁচটি অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা হচ্ছে। রোগ হয়েছে ভাইরাসের, চিকিৎসা দিচ্ছেন ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের। এসবের প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, ডেঙ্গু রোগীর জন্য প্রয়োজন শরীরের তরল ব্যবস্থাপনা (ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট)।

চট্টগ্রাম বেসরকারি হাসপাতাল মালিক সমিতির প্রতিনিধি ডা. ফজল-ই-আকবর চৌধুরী বলেন, যেসব চিকিৎসক সকালে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দিচ্ছেন, তাঁরাই বিকেলে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেন। সুতরাং জাতীয় নির্দেশিকা না মানার কারণ নেই।

চট্টগ্রাম সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, এটি খুব ভয়ংকর তথ্য। চিকিৎসকরাই বলছেন, বেসরকারি ক্লিনিক-হাসপাতালে সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না। মেয়র বলেন, জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া যাবে না। কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনি ব্যবস্থারও হুমকি দেন তিনি। মেয়র বলেন, চট্টগ্রামবাসী মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ।

সভায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেইসঙ্গে প্রতিটি বেসরকারি হাসপাতালে জাতীয় নির্দেশিকা মেনে চিকিৎসা না হলে আইনের আওতায় আনা এবং ডেঙ্গুর চিকিৎসায় প্রতিটি হাসপাতালে পাঁচটি বেড রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

সভায় সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আক্তার চৌধুরী, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোবারক আলী, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা আবুল হাশেম, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. সুমন বড়ূয়া, বিভাগীয় কীটতত্ত্ববিদ মফিজুল হক শাহ ও সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

whatsapp follow image

আরও পড়ুন

×