ঢাকা রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

আঁধার ঘরে রীমা জ্বালাল আলো

আঁধার ঘরে রীমা জ্বালাল আলো

রেজাল্ট জানার পর স্কুলে গিয়ে রীমাকে জড়িয়ে ধরেন মা পিয়ারা বেগম। ছবি: সমকাল

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২২ | ০৮:৫১ | আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২২ | ০৮:৫১

ফুটপাতে বাবা নুরুল আমিনের সবজি বেচার ব্যস্ততা। কম দামে ওএসএসের চাল কিনতে মা পিয়ারা খানম দাঁড়িয়ে লম্বা সারিতে। মেয়ে স্কুলে এসএসসি পরীক্ষার ফলের খোঁজে। কয়েক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে পাঁচ কেজি চাল হাতে বাড়িতে ফিরে মা পিয়ারা খানম যখন শুনলেন, মেয়ে রীমা জিপিএ ৫ পেয়েছে- মায়ের চোখে তখন অশ্রুধারা। স্বর্ণালী আক্তার রীমা সুনামগঞ্জ সরকারি সতীশ চন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।

পিয়ারা খানম জানান, গত জুনের বন্যায় ঘরের ভেতর দিয়ে স্রোত বইছিল। একচালা টিনের ঘর প্রবল তোড়ে টেকেনি। ভেসে গিয়েছিল মেয়েটার সব বই। নানা জনের কাছে গিয়েও বইয়ের ব্যবস্থা করতে পারেননি। পরে এক সাংবাদিক নতুন বই কিনে দিয়েছিলেন। ওই বই এক মাস পড়েই পরীক্ষা দিয়েছে মেয়েটি। জানালেন, মেয়ের ভালো ফলাফলে বিপত্তি আরও বেড়েছে। তাকে পড়াশোনা করাতে পারবেন কিনা, এ নিয়ে নতুন দুশ্চিন্তা।

পিয়ারা খানমের ঘরে চার ছেলেমেয়ে। সবাই পড়াশোনা করছে। স্বামী নুরুল আমিন সবজি বেচে দিনে দুই থেকে আড়াইশ টাকা আয় করেন। এতে সংসার চলে না।
রীমা বলল, মা-বাবার স্বপ্নপূরণের চেষ্টা করছি। প্রতিকূলতার মধ্যেই এগিয়ে যেতে চাই।

সরকারি সতীশ চন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজ মো. মাশহুদ চৌধুরী জানান, বন্যায় বই-খাতা সবই হারিয়েছিল রীমা। এ মেয়েটির সংগ্রাম অনেকের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে।

আরও পড়ুন

×