পূর্বাচল-ঝিলমিলের খালি প্লটে হবে চাষবাস

অমিতোষ পাল
প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২২ | ১৪:০৯
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প আর কেরানীগঞ্জের ঝিলমিল আবাসিক শহর প্রকল্পের ৩৬ হাজার খালি প্লটে চাষবাসের উদ্যোগ নিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি শিগগিরই প্লট মালিকদের জানিয়ে দেওয়া হবে। সরকারের তরফ থেকে আগাম খাদ্য সংকটের কথা বলা হচ্ছে বারবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন- কোনো জমি যেন অনাবাদি না থাকে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই এমন সিদ্ধান্তের পথে হাঁটছে রাজউক। প্রতিষ্ঠানটি মনে করছে, এ দুই প্রকল্পের খালি প্লটে ধান-গম-মসুরিসহ বিভিন্ন শাকসবজি চাষ করলে আসন্ন খাদ্য সংকট মোকাবিলা সহজ হবে।
জানা গেছে, গত ৩ নভেম্বর রাজউকে এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক হয়। ওই সভায় বিভিন্ন বড় আবাসন প্রকল্পের প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা রাজউকের এ উদ্যোগে ঐকমত্য পোষণ করেন।
সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পূর্বাচল প্রকল্পে প্লটের সংখ্যা ৩০ হাজারের মতো। আর ঝিলমিলে প্লট আছে সাত হাজার।
এর মধ্যে পূর্বাচলে কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্ত ছাড়া প্লট মালিকদের বাড়ি তৈরি হয়েছে হাতেগোনা। পূর্বাচলে এ পর্যন্ত নকশার অনুমোদন হয়েছে তিনশর কম। সব মিলিয়ে অন্তত ২৯ হাজার প্লট খালি পড়ে আছে। এর মধ্যে দুয়েকটিতে ধান ও শাকসবজির চাষ চলছে। বাকি প্লটগুলো রয়েছে অব্যবহূত। ঝিলমিলের সাত হাজার প্লটের প্রায় সবই খালি। এসব প্লটে ধান বা শাকসবজি চাষ করলে প্লট মালিকরা উপকৃত হবেন; দেশও খাদ্য সংকট থেকে মুক্তি পাবে।
রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ আশরাফুল ইসলাম সমকালকে বলেন, রাজউকের প্রকল্পগুলোতে প্লট মালিকরা ইচ্ছামতো চাষাবাদ করতে পারবেন। তবে কেউ খালি রাখতে পারবেন না। হয় তাঁকে বাড়ি বানাতে হবে, না হলে সেখানে চাষাবাদ করতে হবে। খালি রাখলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে রাজউক। আর বেসরকারি আবাসন প্রকল্পের মালিকদের শিগগিরই চিঠি দিয়ে জানানো হবে, তারা যেন কোনো জমি খালি না রাখে। কারণ রাজউক অনুমোদিত আবাসন প্রকল্পগুলোতেও অনেকে প্লট কিনে সেখানে ঘরবাড়ি তোলেননি। সেখানে হয় প্লট মালিকরা চাষাবাদ করবেন, অন্যথায় সংশ্নিষ্ট আবাসন প্রতিষ্ঠান চাষ করবে। সেটা করলে এটাও তাদের নিশ্চিত করতে হবে- যেন কোনো প্লট মালিক মনে না করেন, কৃষিকাজের মাধ্যমে তাঁর প্লট বেহাত হয়ে যাচ্ছে।
পূর্বাচল প্রকল্পের পরিচালক মনিরুল হক সমকালকে বলেন, পূর্বাচল প্রকল্পে মাত্র ৩০০ ভবনের নকশার অনুমোদন হয়েছে। এর মধ্যে ভবন উঠেছে মাত্র ৩০টি। বাকি প্লট তো খালিই। আমরা চিন্তা করছি, প্রথমে প্লট মালিকদের একটি গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি জানাতে। তার পর কীভাবে অন্য প্লটে চাষাবাদ করা যায় সেটা চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে। অনেক কমার্শিয়াল প্লট তো বরাদ্দই দেওয়া হয়নি। সেগুলোতে চাষাবাদ করলে তো সমস্যা নেই।
ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পের পরিচালক ওয়াহিদ সাদিক সমকালকে বলেন, ঝিলমিলে ১৮০ একর জমি উন্মুক্ত রাখা আছে। সেখানে শুধু সবজি চাষ করলেই তো অনেকটা জোগান দেওয়া যাবে। এ ছাড়া প্লট বেশিরভাগই খালি।
এ ব্যাপারে রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা সমকালকে বলেন, যেসব মালিক প্লট বরাদ্দ পেয়ে ফাঁকা ফেলে রেখেছেন, তাঁরা সেখানে নিজেদের মতো ধান, শাকসবজি বা ফলদ গাছ রোপণ করবেন। এ ছাড়া প্রকল্পে যেসব উন্মুক্ত স্থান বা গণপরিসর রাখা হয়েছে বা যেসব প্লট এখনও বরাদ্দ দেওয়া হয়নি, সেখানে প্রকল্পের লোকজনের তত্ত্বাবধানে চাষাবাদ করা হবে।