বাঁধ কেটে পানি নিস্কাশন, বোরো চাষ নিয়ে শঙ্কা

ফাইল ছবি
নেত্রকোনা ও মদন প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২২ | ০০:৩৮
মদন উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের কলাগাছিয়া হাওরে বাঁধ কেটে পানি নিস্কাশন করছে একটি মহল। এ কারণে প্রায় পাঁচ হাজার একর বোরোর জমি অনাবাদি থাকার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষিজীবীরা। এ বিষয়ে মানববন্ধন করে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বরবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তাঁরা। গতকাল সোমবার হাওরের বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করেছেন মদনের ইউএনও এবং ভূমি কর্মকর্তা।
অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, মাঘান ইউনিয়নের রানীহালা, কাতলা, রোহুলী ও ঘাটুয়া গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার একর জমিতে বোরো চাষ হয় কলাগাছিয়া হাওরের পানি দিয়ে। তবে এবার বোরোর আবাদ করার আগেই কলাগাছিয়া হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ কেটে পাশের খালে নামিয়ে নেয় ইউপি সদস্য মাহাবুব আলম, মাঘান গ্রামের আবদুল গনি, আমির হামজা, ইয়াকুল, গাজী রহমান, রয়েলসহ একটি মহল। এতে পানিশূন্য হয়ে পড়ে হাওর। এলাকার পাঁচ শতাধিক পরিবার তাদের একমাত্র ফসল বোরোর আবাদ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছে। বিষয়টি মাঘান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম মাসুদকে জানানোর পরও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
গত বুধবার রানীহালা গ্রামের নিরঞ্জন চন্দ্র দাস, মুখশেদ আলী, সালেক মিয়া, আবদুল মজিদ, আবদুল হাইসহ এলাকার ১১০ জন স্বাক্ষর করে একটি অভিযোগপত্র নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বরাবর জমা দেওয়া হয়। এরপর গত রোববার বাঁধ কাটার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে কলাগাছিয়া বাঁধের ওপর মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন রানীহালা গ্রামের রাহেলা খাতুন, তাজুল ইসলাম, আবদুল মজিদ শেখ, কলেজছাত্র আরশাদুল ইসলাম, ঝুমন মিয়া, ঘাটুয়া গ্রামের আবুল কালাম প্রমুখ। এলাকাবাসীর দাবি, ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন বাঁধ কেটেছে। তাই চেয়ারম্যানকে জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের ভাষ্য, মাঘান গ্রামের লোকজন প্রভাব খাটিয়ে বাঁধটি মাছ ধরার অজুহাতে কেটে ফেলে। বাধা দেওয়া অন্য গ্রামের মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।
মাঘান ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম মাসুদ বলেন, 'অভিযোগ দেওয়ার কথা শুনেছি। তবে বিষয়টি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা ঠিক নয়। দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে।'
ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তদের ডাকা হয়। কিন্তু আসেননি তাঁরা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাজজিনা শাহরীন।
বাঁধ কাটার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। তিনি বলেন, ইউএনওকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
- বিষয় :
- পানি নিস্কাশন
- মদন
- বোরো চাষ