মানিকগঞ্জে কৃষি উন্নয়ন কমিটির সম্মেলন
কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্যসহ নানান সুবিধা দাবি
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২২ | ০০:১৫
কৃষিতে কৃষকের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মানিকগঞ্জে জেলা কৃষি উন্নয়ন কমিটির প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সদর উপজেলার উপজেলার বেতিলা এলাকায় অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে জলাবদ্ধতা, ন্যায্যমূল্যসহ কৃষি ও কৃষিকাজে বিভিন্ন সমস্যা এবং দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন কৃষকরা।
গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বেতিলা গ্রিন ফ্লাওয়ার কেজি স্কুল প্রাঙ্গণে বেসরকারি গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান বারসিকের সহযোগিতায় সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা কৃষি উন্নয়ন কমিটি। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু মোহাম্মদ এনায়েত উল্লাহ।
জেলা কৃষি উন্নয়ন কমিটির সভাপতি করম আলীর সভাপতিত্বে এবং বারসিকের জেলার সমন্বয়ক বিমল রায়ের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন জেলা কৃষি উন্নয়ন কমিটির উপদেষ্টা ও পরিবেশ আন্দোলনকর্মী দীপক কুমার ঘোষ, সাংবাদিক আব্দুল মোমিন, রাজীবপুর আদর্শ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আমিনুল ইসলাম, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য শামীমা আক্তার, কমিটির সাধারণ সম্পাদক শফিক বিশ্বাস, কৃষক হযরত আলী, কৃষক মোজাম্মেল হক, গুরুদাস সরকার, কৃষানি হাজেরা খাতুন, কৃষানি আসমা আক্তার প্রমুখ।
কৃষক গুরুদাস সরকার বলেন, সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নে কাটখালী খাল দিয়ে আশপাশের বিপুল পরিমাণ কৃষি জমিতে কালীগঙ্গা নদীর পানি প্রবাহিত হতো। জমির উর্বরতা শক্তি বাড়ত এবং ফলন ভালো হতো। বন্যার পর আবার সেই খাল দিয়ে পানি বের হয়ে যেত। তবে দখল ও ভরাটের কারণে খালটি দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়।
কৃষকদের পেনশন স্কিম চালুর দাবি জানিয়ে কৃষক হযরত আলী বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা ভাতা পান, সরকারি কর্মকর্তারা অবসরে গেলে ভাতা পান। কিন্তু বেঁচে থাকার জন্য কৃষকরা খাদ্যের জোগান দিলেও তাঁদের কোনো ভাতা নেই।
জেলা কৃষি উন্নয়ন কমিটির সভাপতি করম আলী বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে কৃষিকেন্দ্রিক জীবিকায়নে কৃষককে নির্ভর করতে হচ্ছে কোম্পানির বীজ, সার, রকমারি রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ওপর। এ ছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অবকাঠামোগত সমস্যার জন্য কৃষক সঠিক ও পর্যাপ্ত উৎপাদনে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। কৃষি খাতে ঝুঁকি নিরসনে সরকারি সেবা সহযোগিতা ও উদ্যোগ থাকলেও তা চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত নয়। তা ছাড়া উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, ফসল সংরক্ষণাগারের সংকট ও নিয়ন্ত্রণহীন বাজার ব্যবস্থার কারণে কৃষি খাতে প্রকৃত মুনাফা থেকে কৃষক বঞ্চিত হচ্ছেন।
পরিবেশবান্ধব ও জৈব সার ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে দীপক কুমার ঘোষ বলেন, দেশের ৮৫ শতাংশ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির সঙ্গে জড়িত। জলাবদ্ধতা নিরসন, নদী ও খাল খনন, কৃষিজমি সংরক্ষণ এবং ফসলের সংরক্ষণাগার নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।
কৃষকদের এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু মোহাম্মদ এনায়েত উল্লাহ বলেন, মানুষ বাড়ছে আর কৃষিজমি কমছে। এ বিষয়টি বিবেচনা করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ফসলের নতুন জাত উদ্ভাবন করছেন কৃষিবিজ্ঞানীরা। আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে দেশে উৎপাদিত খাদ্যপণ্যের ওপর জোর দিতে হবে।
- বিষয় :
- মানিকগঞ্জ
- কৃষি উন্নয়ন কমিটি
- মানিকগঞ্জ
- কৃষিকাজ