ভালো নেই সিলেটের ৭ শতাধিক ডাক কর্মচারী

সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ | ০২:১৪
দুর্মূল্যের বাজারে পরিবার-পরিজন নিয়ে টিকে থাকার কঠিন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সিলেট ডাক বিভাগের অস্থায়ীভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত (অবিভাগীয়) সাত শতাধিক কর্মচারী।
সিলেটের প্রধান ডাকঘর সূত্রে জানা গেছে, এই বিভাগে সাড়ে তিনশ এক্সট্রা ডিপার্টমেন্টাল ব্রাঞ্চ অফিস রয়েছে। এর প্রতিটি ব্রাঞ্চে তিনজন করে কর্মচারী থাকেন। যাঁদের মধ্যে থাকেন- পোস্টমাস্টার পদমর্যাদার একজন ইডিএ (এক্সট্রা ডিপার্টমেন্টাল এজেন্ট), পোস্টম্যান পদমর্যাদার একজন ইডিডিএ (এক্সট্রা ডিপার্টমেন্টাল ডেলিভারি এজেন্ট) এবং একজন রানার পদমর্যাদার ইডিএমসি (এক্সট্রা ডিপার্টমেন্টাল মেইল ক্যারিয়ার)। সর্বশেষ তথ্যমতে, একজন ইডিএর মাসিক বেতন ৪ হাজার ৪৭৫, ইডিডিএর ৪ হাজার ৩৫০ এবং ইডিএমসির মাসিক বেতন মাত্র ৪ হাজার ৩০০ টাকা।
এ ছাড়া সিলেট বিভাগের এই প্রায় ৭০০ ইডিএ, ইডিডিএ ও ইডিএমসি কোনো উৎসব বা আনন্দভাতা পান না। এমনকি তাদের কোনো পেনশন বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও নেই।
বিভাগের এক্সট্রা ডিপার্টমেন্টাল ব্রাঞ্চ অফিসের কর্মরতরা জানান, এখন সবকিছুর দাম বাড়া। এই সামান্য মাসিক ভাতায় বর্তমান বাজারে হাতখরচ চালানোই কঠিন। একটা সম্মানজনক জীবনের আশায় দীর্ঘদিন ধরে তিনগুণ ভাতা বৃদ্ধির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পোস্টাল ইডি কর্মচারী ইউনিয়নের ব্যানারে সারাদেশে বিভিন্ন সময়ে নানা কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁরা। কোনো কিছুতেই তাঁদের দাবি বাস্তবায়িত হচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিলেট পোস্ট অফিসের এক ইডিএ বলেন, 'দুই যুগ আগে চাকরির শুরুতে মাসিক সম্মানী পেতেন ১ হাজার ২০০ টাকা। বর্তমান সরকারের আমলে তাঁদের মাসিক ভাতার পরিমাণ ৪ হাজার ৪৭৫ টাকা করা হয়েছে। টাকার পরিমাণ কিছুটা বাড়লেও তা বর্তমানে জীবনযাপনের জন্য যথেষ্ট নয়। এক বেলা মজুর খাটলেও ৫০০ টাকা আয় করা যায়। অথচ আমাদের দৈনিক মজুরি মাত্র ১৩৩ টাকা। আমরা এই মানবেতর জীবন থেকে মুক্তি চাই।'
গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের কৈলাস শাখা ডাকঘরের ইডিএ জিলল্গুর রহমান বলেন, 'টিনের ডাক বাক্সের জায়গায় উন্নত প্রযুক্তি এসেছে, ডিজিটাল ই-পোস্ট সেন্টার যোগ হয়েছে। সময়ের সঙ্গে ডাক বিভাগ ও ডাক প্রযুক্তির পরিবর্তন হলেওএ পোস্ট ইডিএ কর্মচারীদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি।'
দক্ষিণ সুরমার লালাবাজার ইউনিয়নের পশ্চিমভাগ শাখা ডাকঘরের ইডিডিএ জগদীশ চন্দ্র নাথের ভাষ্য, যে সম্মানী ভাতা দেওয়া হয় তাতে সম্মানের কিছু নেই। এই বঞ্চনার অবসান হওয়া দরকার।
বাংলাদেশ পোস্টাল ইডি কর্মচারী ইউনিয়ন সিলেট জেলা শাখার (একাংশ) সভাপতি আশরাফ আলী জানান, দাবিদাওয়া আদায়ে তাঁরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। সময়ে সময়ে ভাতা কিছুটা বাড়লেও সেটি কোনোভাবেই সম্মানজনক পর্যায়ে আসেনি।
এ ব্যাপারে সিলেটের প্রধান ডাকঘরের সহকারী পোস্ট মাস্টার জেনারেল (ট্রেজারি) মুজিবুর রহমান বলেন, 'আমরা তাদের সম্মানী বাড়ানোর ব্যাপারে কাজ করছি। এতে অনেক প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হয়। ইডি ব্রাঞ্চে কর্মচারীদের বেতনবৈষম্য দূর করতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে ইডি কর্মচারীরা কিছুটা লাভবান হচ্ছেন।'
- বিষয় :
- সিলেট
- ডাক কর্মচারী
- ডাক বিভাগ
- সিলেট ডাক বিভাগ