ঢাকা মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আ'লীগের আমলে ১৪ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে: বরকত উল্লাহ বুলু

আ'লীগের আমলে ১৪ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে: বরকত উল্লাহ বুলু

ছবি: সমকাল

ফরিদপুর অফিস

প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১৫:২৮ | আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১৫:৩০

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, ‘বিগত ১৪ বছরে এই আওয়ামী সরকারের আমলে ১৪ লাখ কোটি টাকা এই দেশ থেকে পাচার হয়েছে।'

আওয়ামী সন্ত্রাস এবং সরকারের দমন নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এবং বিদ্যুৎ গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য কামানোসহ ১০ দফা দাবিতে ফরিদপুর 

বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। শনিবার বিকেলে ফরিদপুর শহরতলীর কোমরপুর আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউট মাঠে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের মানুষের একটাই দাবি, আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। এই দাবিতে আজকে বাংলাদেশে গত ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে সারা বাংলাদেশে আন্দোলন সংগ্রাম। সেই আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের ১৭ জন ভাইকে হারিয়েছি। এই ১৭ জন ভাই বুকের তাজা রক্ত দিয়েছেন। আজকে আমরা যদি শেখ হাসিনার পতন না ঘটাতে পারি, তাহলে ১৭ জন ভাইয়ের রক্ত বৃথা যাবে, তাদের রক্তের ঋণ আমরা পরিশোধ করতে পারব না।’

তিনি বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশকে একটি বিদেশি তাবেদার নাস্তিকবাদ সরকার নাস্তিকতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমি প্রথমেই এই সরকারের পদত্যাগ দাবি করবো একটি মাত্র কারণেই, আজকে এদেশের আলেম-ওলামা আছেন, পীর মাশায়েকরা আছেন, এদেশে ৯৫ ভাগ মুসলমান বসবাস করেন। আর এদেশের পাঠ্যপুস্তকে ডারউইনের থিউরি নিয়ে এসেছেন, আমরা নাকি বানর থেকে বিবর্তন হয়ে মানুষ হয়েছি। তাহলে কোরআনের যে বাণী, আমরা বিবি আদম হাওয়া থেকে মানুষের সৃষ্টি, সেই কোরআন মিথ্যা হয়ে যাবে। তাহলে এই সরকারের, শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করা এদেশের মানুষের সবার নৈতিক দ্বায়িত্ব। এই নাস্তিকতাকে পাঠ্যপুস্তকে নিয়ে এসেছে আমাদের কোমলমতি বাচ্চারা আগামীদিনে এদেশে নাস্তিক হয়ে বড় হবে, তারা ইসলাম থেকে দূরে সরে যাবে, তাদের মুসমানিত্ব থাকবে না ঈমান থাকবে না।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘এই সরকার যেমনিভাবে পেরেছে লুট করেছে। বিগত ১৪ বছরে ১৪ লাখ কোটি টাকা এই দেশ থেকে পাচার করেছে। কানাডায় হাজার হাজার বাড়ি করেছেন আওয়ামী পরিবারের লোকেরা। কানাডায় যারা আগের থেকে বসবাস করেন, আমাদের যে মেধাবী ছেলেমেয়েরা কানাডায় গিয়ে লেখাপড়া করে উচ্চ চাকরি করেন লজ্জায় তাদের মাথা নত হয়ে গেছে। কানাডায় তারা সংগঠন করেছেন আওয়ামী ঘরানার লোকেরা যেন কানাডায় বাড়ি কিনতে না পারেন এজন্য কানাডার সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।’

বরকত উল্লাহ বলেন, ‘কানাডার সরকার আইন করেছে তারা বাংলাদেশের আওয়ামী লুটেরাদের বাড়ি কিনতে দেবে না। তাই এখন তারা দুবাই গেছেন, দুবাইতে ইতোমধ্যে সাড়ে সাতশত বাড়ি কিনেছেন। একেক বাড়ির দাম দুইশ, তিনশ কোটি টাকা।’

কারও নাম উল্লেখ না করে ববরকত উল্লাহ আরও বলেন, ‘আপনাদের মাদারীপুরের একজন সন্তান মাত্র চার বছরের এমপি, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ছিলেন। উনি চার বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৭টি বাড়ির মালিক হয়েছেন। তারা এমনিভাবে দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা সংসদে একটি আইন পাশ করেছেন কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের নামে কেউ অভিযোগ করতে পারবে না। লাখ লাখ কোটি টাকার কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ লুন্ঠন করে তারা। আওয়ামী পরিবারের লোকেরা বিশ্ব ধনীদের খাতায় নাম লিখিয়েছেন।’ বরকতউল্লাহ বলেন, ‘যখন বাংলাদেশে কিছু বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছিল তখন শেখ হাসিনা বলেছিলেন, এখন তো বিদ্যুৎ আমাদের টুকরিতে করে ফেরি করে বিক্রি করতে হবে। আজকে বিদ্যুৎ দাম যেভাবে বেড়েছে। আজকে মধ্যবিত্ত, নিন্মবিত্তের নাভিশ্বাস। আজকে এক পরিবার থেকে ৬০ জন এমপি আছেন বাংলাদেশে। এইটা পৃথিবীর ইতিহাসে নেই।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির চেয়ারপারসনের উদেষ্টা জহিরুল হক শাহাজাদা মিয়া বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ডাকে মুক্তিযুদ্ধে গেছি, দেশ স্বাধীন করেছি। এখন তারেক রহমানের নেতৃত্বে ১০ দফা বাস্তবায়ন করে দেশে গণতন্ত্র কায়েম করবো। হাসিনার নেতৃত্বে এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।’

বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম বলেন, ‘১০ দফা মানতে হবে, নির্দলীয় সরাকার দিতে হবে। এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে তবেই বিএনপি নির্বাচনে যাবে।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের আগে বলতেন খেলা হবে খেলা হবে। এখন বলেন ভুয়া ভুয়া। ওনার মাথায় রোগ দেখা দিয়েছে।’

আরেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান বলেন, ‘গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে আমাদের এ সংগ্রাম।’

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি শাহ মো. আবু জাফর বলেন, ‘শেখ হাসিনার দিন শেষ, খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ। ওবায়দুল কাদের যতই কায়দা করুক শেষ রক্ষা হবে না। আমাদের হাতে আর সময় নেই, চূড়ান্ত আন্দোলনই আমাদের গড়ে তুলতে হবে।’

এ বিভাগীয় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি এ এফ এম কাইয়ুম জঙ্গী। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব একে কিবরিয়া স্বপন ও জেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক জুলফিকার হোসেন জুয়েল সমাবেশে উপস্থোপনা করেন।

আরও পড়ুন

×