ঢাকা মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

স্ত্রীকে 'অনৈতিক প্রস্তাব' দেওয়ায় বন্ধুকে খুন

স্ত্রীকে 'অনৈতিক প্রস্তাব' দেওয়ায় বন্ধুকে খুন

প্রতীকী ছবি

বরিশাল ব্যুরো

প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ২০:৩৬

বরিশাল নগরীর রূপাতলী এলাকার ব্যবসায়ী শাহিন মোল্লার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে র‌্যাব। অপহরণের আট দিন পর গত শুক্রবার গভীর রাতে বিমানবন্দর থানার ইছাকাঠি এলাকা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে র‌্যাব শাহিন মোল্লার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ইউসুফ মোল্লাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

র‌্যাব জানিয়েছে, শাহিনকে হত্যার হোতা ইউসুফ মোল্লা। হত্যায় জড়িতরা রূপাতলী এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ইউসুফ জানিয়েছেন, ব্যবসায়ী শাহিন তাঁর স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি তাঁকে হত্যা করেন।

ইউসুফ মোল্লার বাড়ি বরগুনার আমতলী উপজেলার কালিকাপুর গ্রামে। গ্রেপ্তার অপর দু'জন হলেন- পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার গণ্ডামারা গ্রামের নাজমুল ইসলাম অমি ও বানারীপাড়া উপজেলার সোনাহার গ্রামের হামিম সিকদার।

মুদি ব্যবসায়ী শাহিন গত ২৭ জানুয়ারি রাতে নিখোঁজ হন। ৩০ জানুয়ারি তার বোন শিরিন আক্তার মুন্নি কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন। এর পর অপরহণকারীরা শাহিনের পরিবারের কাছে ফোন করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। বিষয়টি র‌্যাব-৮ সদরদপ্তরে লিখিতভাবে জানান মুন্নি। পরে র‌্যাব তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অপরাধীদের শনাক্ত করে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শুক্রবার রাতে লাশ উদ্ধার করা হয়।

শনিবার রূপাতলীতে নিজেদের সদরদপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত তুলে ধরেন র‌্যাব-৮ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান। তিনি জানান, ব্যবসায়ী শাহিনের সঙ্গে মূল আসামি ইউসুফের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। একই এলাকায় (রূপাতলী) বসবাসের সুবাদে তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়। এর জেরে ইউসুফের সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেন শাহিন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ইউসুফ। পরিকল্পনা অনুযায়ী ইউসুফ তাঁর দুই বন্ধু নাজমুল ও হামিমকে নিয়ে গত ২৭ জানুয়ারি রাতে শাহিনকে তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ডেকে রূপাতলীর তালুকদার হাউজিংয়ের নাহার ভিলার চতুর্থ তলার ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। সেখানেই তিনজন মিলে শাহিনের গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এর পর লাশ বস্তাবন্দি করে বাথরুমের ফলস ছাদের ওপর রেখে দরজা আঠা দিয়ে বন্ধ করে দেয় খুনিরা। পরদিন ইউসুফ ওই বাসা ছেড়ে দেন। তদন্তে নেমে র‌্যাব প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামিদের অবস্থান শনাক্তের পর নগরীর কাশিপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে বিমানবন্দর থানার ইছাকাঠি এলাকা থেকে র‌্যাব-৮ এর সহকারী পরিচালক রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে শাহিনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

তবে শাহিনের ভগ্নিপতি দেলোয়ার হোসেন দাবি করেন, ইউসুফের স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেননি তাঁর শ্যালক। খুনিরা মাদকসেবী। শাহিনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে তারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

গ্রেপ্তারদের থানায় হস্তান্তর করেছে র‌্যাব। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, দায়ের করা জিডিটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে। লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে ময়নাতদন্ত শেষে।

আরও পড়ুন

×