কুমিল্লায় বিএনপির পদযাত্রায় পুলিশের লাঠিচার্জ-গুলি, আহত ২৫
পুলিশের লাঠিচার্জের সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা ছুটোছুটি করতে থাকেন- সমকাল
কুমিল্লা ও দেবিদ্বার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১৪:২৮ | আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১৪:২৮
কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি উদ্যোগে আয়োজিত পদযাত্রায় পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও গুলি ছুড়েছে বলে জানা গেছে। এতে কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামানসহ অন্তত ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। শনিবার বিকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা ও দেবিদ্বার সীমান্তের খাদঘর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের কুমিল্লা, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপির স্থানীয় নেতারা।
বিএনপির স্থানীয় নেতারা জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির উদ্যোগে পাঁচ শতাধিক দলীয় নেতাকর্মী দেবিদ্বার ও চান্দিনা সীমান্তের খাদঘর এলাকায় সমবেত হয়। এ সময় কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী খাঁন সোহেল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. মারুফ খন্দকার এবং বিএনপির উত্তর জেলা আহ্বায়ক আখতারুজ্জামানসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ জানায়, এক পর্যায়ে নেতাকর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর জড়ো হয়ে যানবাহন চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে পদযাত্রার প্রস্তুতি নেয়। এতে পুলিশ বাধা দিলে বিএনপি কর্মীরা বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে চাইলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং পরে ৮ রাউন্ড শটগান ও ১৩ রাউন্ড রাবার বুলেটের গুলি চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শী বিএনপির নেতারা বলেন, গুলি ও লাঠিচার্জে বিএনপির ও এর অঙ্গ সংগঠনের ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে জসিম উদ্দিন, খোকন খান, আলমগীর হোসেন ও মো. সোহেল নামের চার যুবদল কর্মী চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও অপর আহতদের কুমিল্লা ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ স্থানীয় বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আহতদের মধ্যে আছেন, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আখতারুজ্জামান, চান্দিনা উপজেলা বিএনপি সভাপতি আতিকুল আলম শাওন, সাধারণ সম্পাদক কাজী আরশাদ, চান্দিনা উপজেলা যুবদল যুগ্ম আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন, য্গ্মু আহ্বায়ক উজ্জ্বল, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জসীম উদ্দিন, কুমিল্লা (উঃ) জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক আজহার মেম্বার, কুমিল্লা (উঃ) জেলা মহিলা দলের সভাপতি সুফিয়া বেগম, কুমিল্লা (উঃ) জেলা যুবদল নেতা ভিপি শাহীন, কুমিল্লা (ঊঃ) জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম বাবু, দেবিদ্বার উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রবিউল আউয়াল সাইফুল, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুর রহমান, বিএনপি নেত্রী তাছলিমা বেগম, আলেয়া বেগম, রমজান হোসেন।
আহত কুমিল্লা (উঃ) জেলা মহিলা দলের সভাপতি সুফিয়া বেগম বলেন, পুলিশের হামলায় তিনি ছাড়াও মহিলা দল নেত্রী তাছলিমা বেগম, আলেয়া বেগম মারাত্মক জখম হয়েছেন। তাদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আখতারুজ্জামান বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা করতে চেয়েছিলাম। পুলিশ বিনা উস্কানিতে নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ ও গুলি চালিয়েছে। এতে তিনিসহ দলের ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
তবে চান্দিনা থানার ওসি সাহাব উদ্দিন খান সমকালকে বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা পদযাত্রার নামে মহাসড়কে যানবাহন চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়, এতে নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও শটগানের গুলি চালিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় পুলিশের দুই কনস্টেবল আহত হয়েছেন।