ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

হরিণাকুণ্ডুতে দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে ঢাকাফেরতরা

হরিণাকুণ্ডুতে দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে ঢাকাফেরতরা

হরিণাকুণ্ডু (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২০ | ০০:১০ | আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২০ | ০১:১৭

নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবিলায় সারাদেশে চলছে অঘোষিত লকডাউন। কমিউনিটি পর্যায়ে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ইতোমধ্যেই দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, দোকানপাট, গণপরিবহন বন্ধ করা হয়েছে। মরণঘাতী এ ভাইরাস প্রতিরোধে প্রথমে বিদেশফেরতদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শে প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা তালিকা করে তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করেন। 

ঝিনাইদহের  হরিণাকুণ্ডুতে  প্রশাসনের তালিকা অনুযায়ী ২৩৫ বিদেশফেরত থাকলেও তাদের মধ্যে ১৪ জনকে রাখা হয়েছিল হোম কোয়ারেন্টাইনে। বাকিরা ১ থেকে ২ মাস আগে বাড়িতে ফেরায় তাদেরও রাখা হয়েছিল নজরদারিতে। 

ইতোমধ্যে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকাদের অনেকেই ১৪দিন সময় পার করেছেন। তাদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ না থাকায় স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শে তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন মেয়াদ শেষ করা হয়েছে। 

এদিকে বিদেশফেরতদের নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটলেও নতুন করে সাধারণ মানুষের মধ্যে দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে ঢাকাফেরতরা। 

বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেলা ও উপজেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, উপজেলার ১টি পৌরসভাসহ ৮ ইউনিয়নের প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও তৈরি পোশাক কারখানায়  আরও দেড় থেকে ২ হাজার মানুষ ঢাকায় কর্মরত ছিলেন। সব মিলিয়ে প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষ ঢাকায় কর্মরত ছিলেন বলে জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীদের ওইসব সংগঠন সূত্রে জানা গেছে। তাদের সবাই গত ২৬ মার্চের পর থেকে এলাকায় ফিরেছেন। 

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, ঢাকাফেরতদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা থাকলেও নিয়ম মানছেন না কেউই। আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি ও হাট-বাজারে বন্ধু ও পরিচিতজনদের নিয়ে চলাচলে চরম আতঙ্ক আর দুশ্চিন্তা বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। 

উপজেলার জোড়াদহ ইউনিয়নের ভেড়াখালী গ্রামের সোহেল নামে এক ব্যক্তি সমকালকে জানান, তাদের গ্রামের এক ব্যক্তি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি গত ২৮ মার্চ রাতে শরীরে প্রচণ্ড জ্বর নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু তার পরিবারের লোকজন বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন। 

এছাড়া ওই গ্রামে মাদারীপুর থেকে আরও এক ব্যক্তি আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে এসেছেন। তিনিও ঘুরছেন প্রকাশ্যে। ফলে গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। 

উপজেলা শহরের স্কুল শিক্ষক আসাদুজ্জামান আলম বলেন, গত কয়েকদিনে উপজেলা শহরসহ গ্রামাঞ্চলে ঢাকাফেরতদের বেপরোয়া চলাচল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাদের নিয়ে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা নাফিস সুলতানা বলেন, ইতোমধ্যেই তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় প্রশাসন কাজ করছে। তাছাড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী ও থানা পুলিশ প্রশাসনকে সহায়তা করছে। 

তিনি এ বিষয়ে জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। 

আরও পড়ুন

×