পাইপলাইন পরিচালনায় বিপিসির নতুন কোম্পানি

তৌফিকুল ইসলাম বাবর, চট্টগ্রাম
প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ২৮ মে ২০২৩ | ০৫:১৭
জ্বালানি তেলের পাইপলাইন পরিচালনার জন্য নতুন কোম্পানি গঠন করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। এর নাম পেট্রোলিয়াম ট্রান্সমিশন কোম্পানি পিএলসি। এ কোম্পানি জ্বালানি তেলের সঞ্চালনের পাইপলাইনগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচালন, সুরক্ষা, নিরাপত্তাসহ সব ধরনের দায়িত্ব পালন করবে। বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের দেখভালের দায়িত্ব নিয়ে ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে নতুন কোম্পানিটি।
তেল পরিবহনের ব্যয় ও অপচয় কমিয়ে আনতে সঞ্চালন পাইপলাইনের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলছে বিপিসি। বর্তমানে তারা চারটি পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এগুলো হলো– সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) পাইপলাইন প্রকল্প, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত পাইপলাইন, বিমানে জ্বালানি তেল পরিবহনে পাইপলাইন ও বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ভারত থেকে ডিজেল আসছে। এর দায়িত্বভার বুঝে নিয়েছে পিটিসি-পিএলসি। অন্য তিন প্রকল্পের কাজ শেষ হলে সেগুলোর সব দায়িত্বও পর্যায়ক্রমে চলে যাবে নতুন কোম্পানির হাতে। বিপিসির জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক ইউসুফ হোসেন ভূঁইয়াকে পিটিসি-পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইউসুফ হোসেন ভূঁইয়া সমকালকে বলেন, এসব পাইপলাইন তেল সঞ্চালনে শুধু অপচয়ই রোধ করবে না, সহজতর করার পাশাপাশি সময়ও বাঁচাবে।
এসপিএম পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ইস্টার্ন রিফাইনারি। এটি বাস্তবায়িত হলে আমদানিকৃত পরিশোধিত ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল মাদার ভেসেল (বড় জাহাজ) থেকে সরাসারি পাইপলাইনের মাধ্যমে খালাস করা যাবে। এতে তেল খালাসের সময় তিন-চার দিনে নেমে আসবে। বর্তমানে লাইটার জাহাজে করে তেল খালাসে ১-১১ দিন সময় লাগে।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গার গুপ্তখাল এলাকায় বিপিসির তেল বিপণন কোম্পানিগুলোর মূল স্থাপনা থেকে নদীপথে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল, ফতুল্লা ও চাঁদপুর ডিপোতে তেল নেওয়া হয়। চট্টগ্রাম-ঢাকা পাইপলাইন বাস্তবায়িত হলে তেল পরিবহনের ঝুঁকি কমবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন তদারকি করছে পদ্মা অয়েল।
বিমানে ব্যবহৃত জ্বালানি তেল (জেট এ-১) পরিবহনে নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জের কাঞ্চন সেতু থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কুর্মিটোলা এভিয়েশন ডিপো (কেএডি) পর্যন্ত ভূ-গর্ভস্থ পাইপলাইন স্থাপন করা হচ্ছে। বিপিসির নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২২৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। আর দিনাজপুরের পার্বতীপুর পর্যন্ত ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনে ইতোমধ্যে তেল আসতে শুরু করেছে। ভারতের শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশের পার্বতীপুর পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার পাইপলাইন বসানো হয়েছে। পাইপলাইনের মাধ্যমে বছরে প্রায় ১০ লাখ টন ডিজেল ভারত থেকে আমদানি করা যাবে।
বিপিসির কোম্পানির সংখ্যা এখন বেড়ে আটে পৌঁছাল। পিটিসি-পিএলসি ছাড়া অন্য কোম্পানিগুলো হলো– পদ্মা অয়েল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, যমুনা অয়েল, ইস্টার্ন রিফাইনারি, স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল (এসএওসিএল), এলপিজি লিমিটেড ও ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট ব্লেন্ডার্স।
- বিষয় :
- বিপিসি
- জ্বালানি তেল