ঢাকা মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

আন্দুলবাড়ীয়া ইউপি নির্বাচন

আওয়ামী লীগের ছয় প্রার্থী নিয়ে অস্বস্তি

আওয়ামী লীগের ছয় প্রার্থী নিয়ে অস্বস্তি

কাজী সামসুর রহমান, জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা)

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ২০ জুন ২০২৩ | ০৬:৩০

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এতে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের ছয়জন। নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বাইরে পাঁচজন বিদ্রোহী হওয়ায় আওয়ামী লীগে অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। তবে একক প্রার্থী রাখার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন শীর্ষ নেতারা।

এ নির্বাচনে দলীয়ভাবে না হলেও বিএনপি ও জামায়াত সমর্থকরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। গত রোববার শেষ দিনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন ৯ জন প্রার্থী। পাশাপাশি সংরক্ষিত ৯ জন ও সাধারণ সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন ৪৮ জন। গতকাল সোমবার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে। এতে বিএনপি নেতা বাদে অন্য সবার প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে।

চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মির্জা হাকিবুর রহমান ছাড়াও বিদ্রোহীরা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলাম, মো. মকলেছুর রহমান টজো, শেখ ফিরোজ আহম্মদ, মো. মুহিদুল ইসলাম মধু ও শেখ আসাউল ইসলাম। জামায়াতের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শাখাওয়াত হোসেন ও নিরপেক্ষ হিসেবে হাসান আলী প্রার্থী হয়েছেন। তবে বিএনপি নেতা আতিয়ার রহমানের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে সর্বশেষ আন্দুলবাড়ীয়া ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বিদ্রোহীর কাছে হেরে যান। পরে দলীয় প্রার্থী মির্জা হাকিবুর রহমান কারচুপির অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা করেন। এ কারণে ২০২১ সালে নির্বাচন হয়নি। পরে নির্বাচনের স্বার্থে তিনি মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেন। তবে সীমানা জটিলতায় ফের নির্বাচন আটকে যায়। নির্বাচন কমিশন সীমানা বিভাজনের আবেদন বাতিল করে গত ৩১ মে তপশিল ঘোষণা করে।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিপরীতে যে পাঁচজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তাঁরা সবাই দায়িত্বশীল পদে রয়েছেন। দলের একাধিক প্রার্থী মাঠে কাজ করায় নেতাকর্মীর মধ্যে অস্বস্তি বিরাজ করছে। অনেক কর্মী তাঁদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় ভোটাররা বিরূপ মনোভাব দেখাচ্ছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল বলেন, নেতাকর্মীর সঙ্গে নিয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার চেষ্টা করবেন। যাঁরা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচন থেকে সরানোর চেষ্টা চালানো হবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ বড় রাজনৈতিক দল। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার মতো যোগ্য প্রার্থী অনেকে রয়েছেন। দল থেকে একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। অন্যদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে দলের পক্ষে কাজ করানোর চেষ্টা চলছে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় প্রার্থীকে জয়লাভ করানো সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

নির্বাচন অফিস থেকে জানা গেছে, আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নে ভোটার ২২ হাজার ৯৫০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১১ হাজার ৬৫৮ জন ও নারী ১১ হাজার ২৯২ জন। ১০টি ভোটকেন্দ্রের ৭০টি ভোট কক্ষে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। আগামী ১৭ জুলাই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২৫ জুন প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার মেজর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী আচরণবিধি অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিএনপি নেতা আতিয়ার রহমানের মনোনয়নপত্র বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি।

আরও পড়ুন

×