ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

এক বছরের কাজ শেষ হয়নি চার বছরেও

এক বছরের কাজ শেষ হয়নি চার বছরেও

দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে খুলনার খালিশপুর চিত্রালী কিচেন মার্কেটের নির্মাণকাজ সমকাল

খুলনা ব্যুরো

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৩ | ১৮:০০

খুলনার খালিশপুর চিত্রালী কিচেন মার্কেটের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে। ওই বছরের জুনে কার্যাদেশ দেওয়ার পর ২০২০ সালের ৩১ মার্চে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে মার্কেটটি চার বছরেও নির্মাণ হয়নি। দুইবার মেয়াদ বাড়ানোর পরও কাজ শেষ করতে না পারায় ২০২১ সালের ১৬ জুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কার্যাদেশ বাতিল করে দেওয়া হয়। এরপর প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে কাজ। জীবন চালাতে এখানকার ব্যবসায়ীরা এখন মার্কেটসংলগ্ন সড়ক ও আশপাশে খোলা আকাশের নিচে ছাউনি দিয়ে বেচাকেনা করছেন। এতে তাঁরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, এখান দিয়ে চলাচলের সড়কটিও বন্ধ হয়ে গেছে। মাছ-মুরগিসহ বর্জ্যের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ স্থানীয় বসবাসকারীও।

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) সূত্রে জানা যায়, চিত্রালী কিচেন মার্কেট নামে পরিচিত খালিশপুর পৌর সুপার মার্কেটটি নতুনভাবে গড়ে তুলতে ৯ কোটি ৬০ লাখ ৮৯ হাজার টাকার প্রকল্প নিয়েছিল বাংলাদেশ মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (বিএমডিএফ) কর্তৃপক্ষ। বেজমেন্টসহ চারতলা ভিত্তির (ফাউন্ডেশন) মার্কেটটি প্রাথমিকভাবে সেমিবেজমেন্টসহ একতলা করার কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এমএসই-এমডিই জেভি। তবে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় প্রকল্পটি বাতিল করে বিএমডিএফ কর্তৃপক্ষ। ৭৩ দশমিক ৮০ শতাংশ কাজ শেষ করে চার দফায় ৭ কোটি ৯ লাখ ৫৬ হাজার টাকার বিল তুলেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

এদিকে বাকি কাজ শেষ করতে দুই বছর পর ফের সোমা ইঞ্জিনিয়ারিংকেই দায়িত্ব দিয়েছে কেসিসি। সম্প্রতি কার্যাদেশও পেয়েছে তারা। ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৬৮ লাখ ২৮ হাজার টাকা। তবে বাতিল হওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়ায় কাজ শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা।

মার্কেটের সবজি বিক্রেতা ফারুক হোসেন দুলাল বলেন, মার্কেটটি না হওয়ায় প্রায় চার বছর ধুঁকে ধুঁকে মরছি। ক্রেতা তেমন নেই। তারা সব দৌলতপুর ও হাউজিং বাজারে চলে যায়। ব্যবসায়ী সালাম শরীফ বলেন, বৃষ্টির পানি জমে কাদা হয়। মালপত্র নষ্ট হয়। চুরির আশঙ্কা নিয়েও রাতে মালপত্র রাস্তার ওপর রেখে যেতে হয়।

মাছ বিক্রেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, রাস্তার পাশে গলিতে শেড তৈরি করে মাছ বিক্রি করছি। মাছে পানি ছিটানো হলে ক্রেতারা চলাচল করতে পারেন না। আর সরু গলিতে নারী ক্রেতারা আসতে চান না।

খালিশপুর পৌর সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাফেল ফেরদৌস রানা বলেন, নির্মাণাধীন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা সড়কের ওপর ছাউনি দিয়ে কোনো রকম ব্যবসা টিকিয়ে রেখেছেন। বাধ্য হয়ে অনেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। সমিতির সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান বলেন, চার বছরে ৫০০ ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। শতাধিক ব্যবসায়ী পুঁজি হারিয়ে চলে গেছেন।

কেসিসির প্রধান প্রকৌশলী মো. মশিউজ্জামান খান বলেন, মার্কেটটির বেজমেন্ট করা হলেও গ্রাউন্ড ফ্লোরের কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। লোকাল গভর্নমেন্ট কভিড-১৯ রেসপন্স অ্যান্ড রিকভারি প্রজেক্টের আওতায় মার্কেটটির একতলা নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি সব কিছু ঠিক থাকলে শিগগির প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হবে।  

ঠিকাদার তাহিদুল ইসলাম ঝন্টু বলেন, করোনার কারণে তখন নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারিনি। ঈদের পর কাজ শুরু করব। আগামী ৩-৪ মাসের মধ্যে মার্কেটের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।

আরও পড়ুন

×