লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে শোলাকিয়ায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে দেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ মাঠ কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ৯ টায় জামাত শুরু হয়। নামাজ শেষে বিশ্ব মুসলিম উম্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এবার এই মাঠে ঈদুল আজহার ১৯১তম জামাত অনুষ্ঠিত হলো। এতে ইমামতি করেন মাওলানা মুফতি হিফজুর রহমান খান।
এর আগে সকাল থেকে দলে দলে মুসল্লিরা মাঠে আসতে শুরু করেন। নামাজ আদায় নির্বিঘ্ন করতে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্যসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। সেই সঙ্গে ছিল অনেকগুলো স্বেচ্ছাসেবক দল। মাঠ ও আশপাশের এলাকায় স্থাপন করা হয় অনেক সিসি ক্যামেরা। ছিল পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে। এছাড়াও দু'টি ড্রোনের সাহায্যে পুরো মাঠে নজরদারি করা হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে মুসল্লিদের জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছু বহন করতে দেওয়া হয়নি।

মুসল্লিরা নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করতে পারায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ।
কিশোরগঞ্জের এই ঐতিহ্যবাহী ঈদগাহের সৃষ্টির ইতিহাস সম্পর্কে অনেক জনশ্রুতি প্রচলিত রয়েছে। জানা যায়, ১৮২৮ সালে এই মাঠের গোড়াপত্তন হয়। ওই বছরই স্থানীয় সাহেববাড়ির সৈয়দ আহম্মদের (রহ.) জায়গায় তারই ইমামতিতে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। পরে স্থানীয় হয়বতনগরের দেওয়ান পরিবারের অন্যতম দেওয়ান মান্নান দাদ খানের বদান্যতায় এ মাঠের কলেবর বৃদ্ধি পায়। দেওয়ান মান্নান দাদ খান ছিলেন বীর ঈশা খাঁর অধস্তন বংশধর।
এই প্রসিদ্ধ ঈদগাহের ময়দানের নামকরণের বিষয়েও জনশ্রুতি আছে, দীর্ঘকাল আগে একবার এই মাঠে ঈদের জামাতে মুসল্লির সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল এক লাখ ২৫ হাজার, অর্থাৎ সোয়া লাখ। এই সোয়া লাখ থেকে সোয়ালাখিয়া ও পরে শোলাকিয়ার নামকরণ হয়েছে। অপর একটি ধারণা হচ্ছে, মোগল আমলে এখানে পরগনার রাজস্ব আদায়ের একটি অফিস ছিল। সেই অফিসের অধীনে পরগনার রাজস্বের পরিমাণ ছিল সোয়া লাখ টাকা। এটাও শোলাকিয়া নামের উৎস হতে পারে।