বরগুনায় উন্নয়ন কনসার্টের মঞ্চে গান গাওয়ার সময় ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চুকে হারানোর শোকে অঝোরে কাঁদলেন জেমস। কাঁদালেন বরগুনা স্টেডিয়ামে উপস্থিত হাজারো ভক্তকে। 

একপর্যায়ে নিজেকে সামলাতে না পেরে গানের সুরে সুরে ভক্তদের কাছে ১০ মিনিটের সময় চেয়ে মঞ্চ ছেড়ে চলে যান নগর বাউল খ্যাত জেমস। পরে ফিরে এসে শোকাহত কণ্ঠেই মঞ্চ মাতালেন তিনি। উন্নয়ন কনসার্ট উৎসর্গ করলেন আইয়ুব বাচ্চুকে।

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বরগুনা জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় দেশসেরা শিল্পীদের নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে বরগুনা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় 'উন্নয়ন কনসার্ট :অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ'। বিকেল থেকেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় স্টেডিয়াম।

একদিকে আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুশোক, অন্যদিকে জেমসের অপেক্ষা- এমন পরিবেশে ২০ সহস্রাধিক শোকাহত দর্শক স্টেডিয়ামে হাজির। রাত সাড়ে ৯টার দিকে মঞ্চে ওঠেন জেমস। এ সময় গিটারের সুরে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে পুরো স্টেডিয়াম। বেদনার সেই সুরে স্তব্ধ হয়ে যান দর্শকরা। গানের মাঝেই জেমসের চোখ থেকে অঝোর ধারায় ঝরে অশ্রু। আইয়ুব বাচ্চুর জন্য দর্শকদের চোখেও ছিল শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার অশ্রু।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে গানের মাঝেই হঠাৎ করে বলে ওঠেন জেমস, 'বন্ধুরা আমাকে ১০ মিনিট সময় দাও।' এই বলেই কাঁদতে কাঁদতে মঞ্চ থেকে থেকে বেরিয়ে যান তিনি। বরগুনা স্টেডিয়ামজুড়ে তখন সুনসান নীরবতা। হাজারো দর্শক অথচ টুঁ শব্দও নেই। নিজেকে সামলে খানিক বাদে আবার মঞ্চে ওঠেন তিনি। এরপর ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আবারও গান পরিবেশন করেন তিনি। 

আইয়ুব বাচ্চুর স্মরণে পরিবেশন করেন 'এই রূপালি গিটার ফেলে একদিন চলে যাব দূরে বহুদূরে...' 'অভিলাষী আমি, অভিমানী তুমি...' 'আর বেশি কাঁদালে উড়াল দেব আকাশে...' 'সেই তুমি কেন এত অচেনা হলে...', 'তুমি ক্ষমা করে দিও আমাকে...'।

জেমস ছাড়া এ উন্নয়ন কনসার্টে অন্যান্যের মধ্যে সঙ্গীত পরিবেশন করেন দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী বাপ্পা মজুমদার, পুলক, মেহেরীন। বরগুনার স্থানীয় শিল্পীরাও ছিলেন। শুধু জেমস নন, সব শিল্পীর কণ্ঠেই ছিল আইয়ুব বাচ্চুকে হারানোর শোক।

কনসার্টের মাঝখানে দর্শকদের উদ্দেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, বরগুনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ, বরগুনা পুলিশ সুপার মারুফ হাসান, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আতাউর রহমান।