ঢাকা বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

বাঞ্ছারামপুর

আইন ভেঙে নির্বিচারে কৃষি জমির শ্রেণি বদল

আইন ভেঙে নির্বিচারে কৃষি জমির শ্রেণি বদল

বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০

ফরদাবাদ গ্রামের কানু মিয়া নিজের কেনা ফসলি জমিতে মাটি ভরাট করে বাড়ি নির্মাণ করেছেন ১০ বছরের বেশি সময় আগে। বিনা অনুমতিতেই জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে ফেলেছেন তাঁর মতো বহু মানুষ।

আইন ভঙ্গ করে প্রতি বছর শত শত বিঘা ফসলি জমির শ্রেণি পরিবর্তন হচ্ছে বাঞ্ছারামপুরে। অথচ ভূমি কর্মকর্তাদের উদাসীনতায় ব্যবহারভিত্তিক শ্রেণি পরিবর্তন না করায় রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। নির্বিচারে কৃষিজমি ভরাটের কারণে অনেক জায়গায় বর্ষা ও সেচের পানি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তারা ফসলি জমি, বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকার জমির উন্নয়ন কর আদায় করেন। ২০১৬ সালের কৃষিজমি সুরক্ষা আইনের (খসড়া আইন)-৪ ধারায় বলা রয়েছে, কৃষিজমি ভরাট করতে স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু এই আইনের তোয়াক্কা না করে নির্বিচারে ফসলি জমি ভরাট করা হচ্ছে। বিভিন্ন গ্রামে ফসলি জমিতে বাঁধ, ড্রেজার দিয়ে মাটি ভরাট করে বসতভিটা নির্মাণ করা হচ্ছে। বছরের পর বছর এই অবস্থা চলে এলেও রহস্যজনক কারণে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না ভূমি কর্মকর্তারা।

রুপসদী গ্রামের ব্লক ম্যানেজার সালে আহমেদ জানান, আগে তাদের ব্লকে ২০০ বিঘা জমি ছিল। গত দুই বছরে ৪০ বিঘা জমিতে বাঁধ দিয়ে ভরাট করে বাড়ির নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতি বছরই এভাবে কৃষিজমি কমে যাচ্ছে। আরও কিছু ব্যক্তি কৃষিজমি থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বিক্রি করছেন।

কৃষিজমিতে বাড়ি নির্মাণে ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও অনুমতি নেওয়ার বিধান রয়েছে। অথচ সেই বিধান মানছেন না কেউ। নিজেদের ইচ্ছা মতো কৃষিজমিতে বাঁধ দিয়ে বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে বলে দাবি ছলিমাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জালাল মিয়ার।

দরিয়া দৌলত ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা শামীমা আক্তার বলেন, ‘কাজের ব্যস্ততার কারণে মাঠে যাওয়ার সুযোগ হয় কম, তবে আমরা চেষ্টা করি। যে জমিগুলোর শ্রেণি পরিবর্তন হয়েছে, সেগুলোর ব্যবহারভিত্তিক অবস্থান দেখে খাজনা আদায় করি আমরা।’

সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী আতিকুর রহমানের ভাষ্য, কৃষিজমি ভরাট করে বাড়ি কিংবা অন্য কিছু করতে হলে অবশ্যই অনুমতি নিতে হবে। কেউ না নিয়ে থাকলে অপরাধ হবে। জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা হলে অবশ্যই খাজনার পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। সরেজমিন দেখে খাজনা আদায় করতে নায়েবদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফসলি জমি ভরাটের খবর পেলে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়।

আরও পড়ুন

×