ঢাকা শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

ডিসির হস্তক্ষেপে টাকা ফেরত

ডিসির হস্তক্ষেপে টাকা ফেরত

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০

কিশোরগঞ্জে এক সরকারি কর্মচারীর মৃত্যুর পর তাঁর প্রভিডেন্ট ফান্ডের (কর্মচারীদের ভবিষ্য নিধি) টাকা আত্মসাৎ করেছিলেন প্রশাসনের নাজির। বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নজরে আনলে তিনি পুরো টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। তবে নাজিরের গাফিলতিতে ওই কর্মচারীর মৃত্যু দাবির ৮ লাখ টাকা পরিবারটি পায়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মারা যাওয়া ওই কর্মচারীর নাম খায়রুল আমিন ভূঁইয়া (৫৮)। তিনি সদর উপজেলা ভূমি অফিসের চেইনম্যান ছিলেন। স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি হৃদরোগে মারা যান তিনি। কর্মচারীদের ভবিষ্য নিধি অনুযায়ী তাঁর পরিবারটি এককালীন ৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকা পাওয়ার কথা ছিল।

লাইনম্যানের স্ত্রী নাজমা আক্তারের ভাষ্য, তাঁকে সদর উপজেলা ভূমি অফিসে ডেকে নিয়ে চেকে স্বাক্ষর রাখেন নাজির কামরুল ইসলাম ভূঁইয়া। গত ৮ ফেব্রুয়ারি তাঁর (নাজমা আক্তার) ব্যাংক হিসাবে ৫ লাখ ৮৯ হাজার টাকা জমা হয়। অবশিষ্ট দুই লাখ ৯৬ হাজার টাকা ‘এসিল্যান্ড খরচ করে ফেলেছেন, পরে দেওয়া হবে’ বলে তাঁকে জানান নাজির। গত ৬ মার্চ আরও এক লাখ টাকা ব্যাংকে দিয়েছেন।

বাকি ১ লাখ ৯৬ হাজারের জন্য তিনি তাগিদ দিলেও কর্ণপাত করেননি নাজির কামরুল। পরে আত্মীয়দের মাধ্যমে বিষয়টি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদকে জানান তিনি। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে গত ১১ জুলাই তাঁকে ১ লাখ ৯৬ হাজার টাকা দেন নাজির।

জানা গেছে, খায়রুল আমিন ভূঁইয়ার মৃত্যু দাবির টাকার কাগজপত্র নাজিরের টেবিলেই প্রস্তুত হওয়ার কথা। তবে নাজির এসব কাগজ পাঠাননি বলে মৃত্যু দাবির কোনো টাকাই পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন খায়রুল আমিনের সহকর্মীরা।

নাজির কামরুলের কয়েকজন সহকর্মী জানিয়েছেন, প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ করতে না পেরে প্রতিহিংসার বশেই নাজির মৃত্যু দাবির কাগজ পাঠাননি।

নাজমা আক্তার বলেন, তাঁর স্বামীর মৃত্যু দাবির টাকার জন্য কামরুল ইসলামকে অনেকবার তাগিদ দিয়েছেন।

নাজির কামরুল ইসলাম দাবি করেন, খায়রুল আমিন ভূঁইয়ার আগের সংসারের দুই মেয়ে আছেন। তাদের আপত্তির কারণে দুই লাখ ৯৬ হাজার টাকা আটকে রাখা হয়েছিল।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। সব টাকাই নাজির কামরুল ফেরত দিয়েছেন।

মৃত্যু দাবির পুরো টাকা মৃত্যুর পরই পরিবার পেয়ে যায়– এটাই নিয়ম। পেনশনের সঙ্গে মৃত্যু দাবির টাকার সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, একজন সহকর্মী মারা গেলে আরেকজন সহকর্মীর উচিত তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়ানো।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, নাজিরকে তাঁর কৃতকর্মের জন্য বদলি করা হবে এবং তদন্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খায়রুল আমিনের স্ত্রীকে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন

×