ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

মাটির বদলে বালু দেওয়া সেই বাঁধে ভাঙন

মাটির বদলে বালু দেওয়া সেই বাঁধে ভাঙন

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০

বাগেরহাট সদরের ভৈরব নদের তীরে মাটির বদলে বালু দিয়ে নির্মিত বাঁধে ছয় মাসের মধ্যে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বালু দেওয়ার অভিযোগ করে এর স্থায়িত্ব নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন স্থানীয়রা।

মঙ্গলবার রাতে সদর উপজেলার মুনিগঞ্জ সেতুর নিচে বাঁধের একটি অংশ ধসে যায়। এতে গোপালকাঠি গ্রামের সহস্রাধিক মানুষের যাতায়াতের একমাত্র পথ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

নাজিরপুর উপ-প্রকল্পের অধীনে ছয় মাস আগে সংস্কার হওয়া বাঁধে ভাঙনের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, বাঁধের নিচ দিয়ে অবৈধভাবে তৈরি কালভার্টের জন্যই ওই ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত অর্থবছরে ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে বাঁধটি সংস্কারের কাজ করে পাউবো। তখন স্থানীয় একটি ইটভাটা অবৈধ কালভার্টটি অপসারণ করেনি। বর্ষা শুরুর পর এখান থেকে পানির চাপে বাঁধে ভাঙন দেখা দিলে প্রথমে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করে পাউবো। পাশাপাশি ভাটা মালিককে কালভার্ট অপসারণে চিঠি দেওয়া হয় বলে জানায় তারা।

বুধবার ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে যান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন। এ সময় বাঁধে ধসের জন্য স্থানীয়রা বাঁধ তৈরিতে বালু ব্যবহার, অবৈধ কালভার্ট নির্মাণ এবং বাঁধের গোড়া দিয়ে নদীর চরের মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়ার অভিযোগ করেন তিনি।

স্থানীয় গোপালকাঠি গ্রামের জিল্লাল শেখ বলেন, প্রায় দুই দশক আগে ওই বাঁধের পাশে এমবিএ নামে একটি ইটভাটা গড়ে ওঠে। ভাটা মালিক মিজানুর রহমান মনি নদীর তীর থেকে অবৈধভাবে মাটি তুলে নিয়ে ইটভাটায় ব্যবহার করেন। ক’দিন আগেও মাটি কেটে নেওয়ায় বাঁধের আর একটি অংশ ধসে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

গোটাপাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শাহ আলম বিপ্লব বলেন, বেড়িবাঁধ কেটে ভাটা মালিক কালভার্টটি নির্মাণ করেছেন। কালভার্ট নির্মাণের কারণে বাঁধটি ভেঙে গেছে। তিনি অবৈধভাবে কেশবপুর নদের মাটি কেটে নিয়ে ইট তৈরি করেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে ইটভাটা মালিক মিজানুর রহমান মনি বলেন, কালভার্টটি ১৩ থেকে ১৪ বছর আগে নির্মাণ করা। সম্প্রতি বেড়িবাঁধের সংস্কার করা হয়। ওই সংস্কারের কাজে বাঁধের পাশ দিয়ে মাটি কাটা হয়েছে। মাটি কাটার কারণে ধীরে ধীরে তা ভেঙে গেছে। দূরের পতিত জমি থেকে মাটি কিনে এনে ইট তৈরি করেন।

সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিনের ভাষ্য– ওই কালভার্ট দিয়ে একটি মাছের ঘেরের পানি ওঠানামা করে। পানির চাপে ধীরে ধীরে বাঁধটি দুর্বল হয়ে ভেঙে গেছে।

জানতে চাইলে পাউবো বাগেরহাট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ বলেন, বাঁধ মাটি দিয়েই সংস্কার করা হয়েছে। কোথাও কোথাও মাটির তীব্র সংকট থাকায় সেখানে কিছুটা বালু ব্যবহার করা হয়েছে। বাঁধের গোপালকাঠি অংশে অবৈধভাবে একটি কালভার্ট ছিল। ওই কালভার্টের কারণে বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়।

আরও পড়ুন

×