ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

সরকারি জায়গায় আ’লীগ নেতার মার্কেট

সরকারি জায়গায় আ’লীগ নেতার মার্কেট

রাজবাড়ীতে সরকারি জমিতে মার্কেট নির্মাণ করছেন আওয়ামী লীগ নেতা - সমকাল

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৩ | ০৪:২৫ | আপডেট: ২০ আগস্ট ২০২৩ | ০৪:২৫

রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক উপজেলার মাজবাড়ি ইউনিয়নের মোহনপুর বাজারে সরকারি জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাসেল আহমেদ বা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা স্পষ্ট করে কিছু না বলায় বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। রাসেলের বাবা ইউসুফ হোসেন এলাকায় প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত। তিনি জেলা পরিষদের সদস্য ও মাজবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

স্থানীয় কয়েক ব্যবসায়ী জানান, মোহনপুর বাজারের ১৮ শতাংশ জমির আট শতাংশ আগেই দখল হয়ে গেছে। বাকি ১০ শতাংশে গত প্রায় ২০ দিন ধরে মার্কেট নির্মাণ করছেন রাসেল। ওই ১০ শতাংশ জমি এখনও সরকারের নামে রেকর্ড রয়েছে।

জমির কাগজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১০ শতাংশ নাল হিসেবে চিহ্নিত করে সরকারের পক্ষে মালিক জেলা প্রশাসক বলে উল্লেখ রয়েছে।

গত সোমবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মোহনপুর বাজারের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে বিশাল জায়গাজুড়ে মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে। নির্মাণাধীন মার্কেটের এক পাশ দিয়ে চলে গেছে রাস্তা। সামনে কিছু জায়গা খালি। তার সামনে বসতবাড়ি। বিপরীত দিকে মমিন মণ্ডল নামে এক ব্যবসায়ীর দোকানঘর।

মাজবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম বলেন, মোহনপুর বাজারে আওয়ামী লীগ নেতা রাসেল সরকারি জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করছেন বলে তারা শুনেছেন।

এ বিষয়ে মাজবাড়ি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান জানান, ওই জমি রূপালী চক্রবর্তী নামে একজন রায় পেয়ে রাসেলের কাছে বিক্রি করেন। রূপালী চক্রবর্তী কে, কোথা থেকে কীসের রায় পেলেন– জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি এসব বিষয়ে তেমন কিছু জানেন না।

তিনি বলেন, ভিপি জমি ছিল ৭৫ শতাংশ। তারা পেয়েছেন ৫৫ শতাংশ। বিএসে ৫৫ শতাংশ রেকর্ড হয়েছে। বাকিটা মিউটেশন বাদ দিয়েছে। সেটা সরকারি হয়নি। ৭০২ নম্বর দাগ এখনও সরকারি।

তাহলে সেখানে কীভাবে মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে– জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি সেখানে গিয়ে বিষয়টি দেখবেন। এরপর গত সোমবার তাঁকে আবার কল করা হলে তিনি ৭০২ নম্বর দাগের বিষয়টি এড়িয়ে বলেন, রাসেল ৭০৩, ৭০৪ ও ৭০৬ নম্বর দাগ নিয়েছেন। আবার ৭০২ নম্বর দাগের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, জমিটি মাপা হয়নি। মাপ দিয়ে দেখতে হবে। ‘স্যারদের’ সঙ্গে কথা বলেছেন। সার্ভেয়ার সময় দিলে মেপে দেখা হবে।

গত সোমবার কালুখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেরুন্নাহার বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন। এরপর গত বৃহস্পতিবার আবার ফোন করা হলে তিনি জানান, মোহনপুর বাজারে তাদের (সরকারি) জমি আছে। তহশিল অফিস থেকে লোক পাঠিয়েছিলেন। আগামী সপ্তাহে জমি মাপা হবে; মাপলে বোঝা যাবে।

রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান বলেন, কালুখালী ভূমি অফিস থেকে লোক পাঠিয়ে মার্কেট নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহে জমিটি মাপা হবে।

মোহনপুর বাজারে সরকারি জমিতে কোন প্রক্রিয়ায় মার্কেট নির্মাণ করছেন– এমন প্রশ্নের জবাবে গত সোমবার রাসেল আহমেদ জানান, তিনি বাজারের সভাপতি। তাঁর কেবল নেটওয়ার্ক ব্যবসা রয়েছে। (গত) বুধ অথবা বৃহস্পতিবার দেখা করে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলবেন। তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি কিছুই জানাননি।

আরও পড়ুন

×