ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে বন্দিদের প্রীতি ফুটবল খেলা

কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে বন্দিদের প্রীতি ফুটবল খেলা

কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে বন্দিদের মধ্যে প্রীতি ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়- সমকাল

কিশোরগঞ্জ অফিস

প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ | ০৯:১২

৩০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগার। এই জেলা কারাগারের মাঠে মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জ মুক্ত দিবসে 'বিজয় দিবস প্রীতি ফুটবল' খেলার আয়োজন করে কারাগারে আটক বন্দিরা। প্রীতি ফুটবল খেলার উদ্বোধন করতে এবং বন্দিদের উৎসাহ দিতে জেলা কারাগারে হাজির হন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী। ৩০ তরুণ বন্দি লাল ও কমলা দলে বিভক্ত হয়ে ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণ করে। 

খেলা উদ্বোধনের আগে জেলা প্রশাসক খেলোয়াড়দের সঙ্গে পরিচিত হন। এ সময় বক্তব্য দিতে গিয়ে জেলা প্রশাসক সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী বলেন, আধুনিক এই জেলা কারাগারকে সত্যিকার অর্থে কারাগার বলা যায় না, বাস্তবে এটি হচ্ছে একটি সংশোধনাগার। কারণ ইতোমধ্যে কারাগারে সুর তরঙ্গ সংগীত বিদ্যালয় চালু করা হয়েছে। বিদ্যালয়ে প্রতিদিন গানের আসর হয়। নতুন নতুন শিল্পীর জন্ম হয়। রয়েছে জুতা তৈরির কারখানা, যেখানে বন্দিদের হাত হয়ে উঠছে কর্মীর হাত। কয়েকদিনের মধ্যে চালু হবে বেকারি, যেখান থেকে তৈরি হবে উন্নতমানে রুটি-বিস্কুট। জেলা প্রশাসক পরে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ উদ্বোধন করেন।

৯০ মিনিটের আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় জমজমাট ফুটবল খেলাটি গোলশূন্যভাবে শেষ হয়। পরে টাইব্রেকারে লাল দল ৫-৪ গোলে নীল দলকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। খেলা দেখতে শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা জেলা কারাগারের দ্বিতল দর্শকসারিতে জড়ো হন। সেইসঙ্গে ভেতরে দর্শকসারিতে যুক্ত হয় কারাগারে এক হাজার ৪০০ বন্দি।

খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণ করেন ও বক্তব্য দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (সদর) আবদুল কাদের মিয়া। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- সরকারি কৌঁসুলি শাহ আজিজুল হক, নারীনেত্রী মানছুরা জামান নতুন, জেল সুপার বজলুর রশীদ ও কারাধ্যক্ষ বাহারুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন- মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার কামাল, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হামিদুল ইসলাম নিউটন, নারীনেত্রী ডা. রুবী রহমান, সাংবাদিক নূর মোহাম্মদ, জুয়েল প্রমুখ।

বন্দি খেলোয়াড়রা জানায়, তাদের ৩০ জনের মধ্যে ২৮ জনই মাদক সেবন করত। জেলা কারাগারে আসার পর তারা আর মাদক সেবক করে না। জেল সুপার বজলুর রশীদ জানান, জেলা কারাগার মাঠে প্রতিদিন ফুটবল খেলাসহ নানা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অনুশীলন চলে। এগুলো থেকে যাদের ফারফরম্যান্স ভালো, তাদের দিয়ে ফুটবল দল গঠন করা হয়। তা ছাড়া খেলাটি আকর্ষণীয় করে তুলতে ছয় মাস ধরে তাদের প্রশিক্ষণ চলে।

ইউএনও আবদুল কাদের মিয়া বলেন, এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলার মাধ্যমে বোঝা যায়, বন্দিরা প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকারবদ্ধ। তারা কারাগার থেকে ছাড়া পেলে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে।

আরও পড়ুন

×