ঢাকা শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

কমছে তিস্তার পানি, বাড়ছে ভাঙন আতঙ্ক

কমছে তিস্তার পানি, বাড়ছে ভাঙন আতঙ্ক

তিস্তার পানি কমলেও রংপুরের অনেক চরগ্রাম এখনও তলিয়ে আছে। রোববার গঙ্গাচড়ার ছবি - সমকাল

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৩ | ১৮:০০

উজানের ঢল ও টানা কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাতে উত্তরাঞ্চলে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কমতে শুরু করেছে তিস্তা নদীর পানি। তবে ভাঙন আতঙ্ক ছাড়াও নানা ধরনের ভোগান্তিতে রয়েছে তিস্তাপাড়ের মানুষ। এখনও প্লাবিত নিম্নাঞ্চল। ডুবে আছে ফসলের ক্ষেত।

এদিকে, তিস্তার পানি ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে কমলেও রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। এই পয়েন্টে গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত পানি বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। এ ছাড়া গঙ্গাচড়া ও পীরগাছা উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত অবস্থায় রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, গতকাল রোববার দুপুরে তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নদীতীরবর্তী কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের ঢুষমারার চর, পাঞ্জরভাঙ্গা, চরগদাই, গোপীডাঙ্গা, নিজপাড়া ও তালুক শাহবাজপুর; টেপামধুপুর ইউনিয়নের চরগনাই, হরিচরণ শর্মা, বিম্বথ চর, আজমখাঁ চর, টাপুর চর এবং পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের হাগুড়িয়া হাশিম, শিবদেব এলাকার সহস্রাধিক পরিবার এখনও পানিবন্দি। কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিদুল হক বলেন, সহায়তার জন্য ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে।

এদিকে, লালমনিরহাটে সব নদনদীর পানি কমতে শুরু করেছে। হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার তিস্তা-তীরবর্তী চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল থেকে পানি নামছে। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, আগামী এক দিনে রংপুর ও লালমনিরহাটের তিস্তা নদীর অববাহিকায় নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

তবে কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি কমলেও অন্য নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত। ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমারের পানি বাড়ায় এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলের দেড় শতাধিক চর-দ্বীপচর তলিয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে রোপা আমন ক্ষেতসহ ৩৪০ একর আবাদি জমি। তিস্তার প্রবল স্রোতে ঘড়িয়ালডাঙ্গার বুড়িরহাটের বামতীরের একটি স্পার বাঁধের আরসিসি অংশ নদীতে চলে গেছে। এতে ভাঙন ঝুঁকিতে তিস্তাপাড়ের শত শত পরিবার। রাজারহাট, উলিপুর ও সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় প্রায় চার হাজার পরিবার পানিবন্দি।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ১৫০ মিটার বাঁধ ও আরসিসি স্পারের বাকি ৩০ মিটার রক্ষায় কাজ চলছে। আশা করছি, বাঁধ ও বাকি আরসিসি স্পার রক্ষা করা সম্ভব হবে।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলাতেও তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত। পানি আরও ১০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই করছে। প্লাবিত হয়েছে চরাঞ্চল। উপজেলা কৃষি ও মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ১০০ হেক্টর জমির রোপা আমনসহ বিভিন্ন ফসল ডুবে গেছে; ভেসে গেছে শতাধিক পুকুরের মাছ। বেলকা, হরিপুর, চণ্ডীপুর, শ্রীপুর, তারাপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর-এ আলম জানান, ত্রাণসামগ্রী বরাদ্দ পেলে পানিবন্দি পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট অফিস এবং জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি]

আরও পড়ুন

×