ঐতিহ্য
এক দশক পর পুরোনো রূপে শারদা হল

সিলেটের শারদা স্মৃতি ভবনের সংস্কার কাজে শেষ মুহূর্তের ঘষামাজা -সমকাল
সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৮:০০
সুরমা নদীর পাড় ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শারদা স্মৃতি ভবন। শারদা হল নামে পরিচিত ভবনটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। এক দশক পরিত্যক্ত থাকার পর অবশেষে এই ভবন পুরোনো রূপে ফিরছে। সংস্কারের পর আজ বৃহস্পতিবার এটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এর ফলে সংস্কৃতিকর্মীদের পদচারণায় আবার প্রাণ ফিরবে ভবনটির।
জানা গেছে, ৮৭ বছর আগে কলকাতা ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটের আদলে সুরমা নদীর কিন সেতুর উত্তর পাড়ে শারদা স্মৃতি ভবনটি নির্মাণ করা হয়। ৩৯ শতক জায়গাজুড়ে ভবনের অবস্থান। স্বদেশি আন্দোলনের নেতা, আইনজীবী, শিক্ষানুরাগী ও চা-ব্যবসায়ী সারদাচরণ শ্যামের (১৮৬২-১৯১৬) স্মৃতি রক্ষার্থে তাঁর ছোট ভাই বিমলাচরণ শ্যাম মিলনায়তনটি স্থাপন করেন। মিলনায়তনের নাম ‘শারদা স্মৃতি ভবন’ হলেও এটি শারদা হল নামেই পরিচিতি পায়। সিলেটের প্রথম এই মিলনায়তনে গান, নাটকসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। পরবর্তী সময়ে সিলেট পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয়ে আসছে ভবনটি।
২০১২ সালে নতুন নগর ভবন নির্মাণ শুরু হলে সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম শারদা হলের পার্শ্ববর্তী তোপখানার ‘পীর হাবিবুর রহমান’ পাঠাগারে স্থানান্তর করা হয়। আর পাঠাগারের বইপত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্র রাখা হয় শারদা হলে। শারদার মূল ভবনের পাশের কক্ষে সিটি করপোরেশনের কয়েকটি দপ্তরের কার্যক্রম চালু করা হয়। সেই থেকে শারদা হলে বন্ধ হয়ে যায় সাংস্কৃতিক চর্চা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান। পাশাপাশি দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকায় মিলনায়তনের অনেক কিছুই ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। মঞ্চের সব কাঠ নষ্ট হয়ে যায়। ভবনের পলেস্তারা খসে পড়ে। পানি পড়ত ছাদ চুইয়ে। শেওলা জমে দেয়ালে। ফাটল তৈরি হয় পিলার ও দেয়ালে।
দুই বছর আগে নগর ভবন হওয়ার পর শারদা হল সংস্কার করে উন্মুক্তের দাবি তোলেন সংস্কৃতিকর্মীরা। সিটি মেয়র চার মাস সময় নিলেও এক বছর পর ভবনটি সংস্কারে হাত দেন। সম্প্রতি সংস্কারকাজ শেষ হয়েছে। চেয়ার স্থাপন ছাড়া তেমন কোনো কাজ বাকি নেই। আজ বিকেলে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ভবনটি আবার আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করবেন।
সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত সমকালকে বলেন, শারদা হল সিলেট অঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী মিলনায়তন, যা সংস্কৃতিচর্চার জন্য একটি পরিবারের পক্ষ থেকে নির্মাণ করা হয়েছিল। এটি সংস্কারের জন্য গত বছর আন্দোলন করি। আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এক বছর পর সিটি মেয়র সেটি সংস্কারে হাত দেন।
মেয়র আরিফুল হক বলেন, শারদা হলের মঞ্চ নতুনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। ছাদে ঢালাই দেওয়া হয়েছে। রঙের কাজও করা হয়েছে। সে জন্য সময় লেগেছে। দেরিতে হলেও সংস্কারকাজ শেষ হয়েছে। নতুন করে যাত্রা শুরু করবে শারদা হল। ভবনটি সরগরম থাকবে আগের মতো নানা অনুষ্ঠানে।
- বিষয় :
- ঐতিহ্য
- এক দশক পর পুরোনো রূপে শারদা হল