- সারাদেশ
- নিজ এলাকায় জামানত হারালেন সেই আবুল কালাম
নিজ এলাকায় জামানত হারালেন সেই আবুল কালাম

বিএনএফ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ
২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ (গুলশান-বনানী) আসনের মতো অভিজাত এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনএফ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। ২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও একই আসন থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। পরে অবশ্য মহাজোটের প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে সরে যান।
কিন্তু ছয় বছরের ব্যবধানে চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও-পাঁচলাইশ) আসনের উপ-নির্বাচনে অংশ নিয়ে জামানত হারালেন তিনি। এই নির্বাচনে মাত্র ১ হাজার ১৮৫ ভোট পেয়েছেন এক সময়ের আলোচিত-সমালোচিত এই নেতা।
আবুল কালামের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রাম-৮ আসনের আওতাধীন বোয়ালখালী উপজেলার পোপাদিয়া গ্রামে। নিজের এলাকায় নির্বাচনে অংশ নিয়ে এত কম ভোট পাওয়ায় বোয়ালখালীসহ চট্টগ্রামে চলছে নানামুখী আলোচনা।
অবশ্য এ ব্যাপারে আবুল কালাম বুধবার মুঠোফোনে সমকালকে বলেন, আওয়ামী লীগ বড় সংগঠন, বিএনপিও প্রায় সমকক্ষ দল। তাদের ভোট ব্যাংক রয়েছে। নিজের এলাকা হলেও চট্টগ্রাম-৮ আসনের আমার সাংগঠনিক ভোট তেমন একটা নেই। যারা আমাকে ভালোবাসেন কেবল তারাই আমাকে ভোট দিয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঢাকা-১৭ আসনের পাশাপাশি চট্টগ্রাম-৮ আসন নিয়ে আমার বিশেষ স্বপ্ন ও পরিকল্পনা রয়েছে। ভবিষ্যতে দু'টি আসন থেকেই আমি নির্বাচন করতে চাই। উপ-নির্বাচনে অংশ নিয়ে নিজের এলাকায় নির্বাচনে জয়ের ক্ষেত্র তৈরি করতে এবার একটি চারা লাগিয়েছি। এখন থেকে এলাকায় নিয়মিত হবো।
আবুল কালাম আজাদের বাড়ি বোয়ালখালীতে হলেও এলাকার সঙ্গে তার তেমন কোনো যোগাযোগ নেই। ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য থাকাকালে মাঝেমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চট্টগ্রামে গেলেও গ্রামের বাড়িতে খুব একটা যেতেন না। চট্টগ্রামে বিএনএফের দলীয় অবস্থাও তেমন ভালো নয়।
এই প্রসঙ্গে আবুল কালাম বলেন, চট্টগ্রাম জেলা ও বোয়ালখালীতে বিএনএফের কমিটি রয়েছে। তারা কাজ করেছেন। নির্বাচনের ১৫ দিন আগে থেকে আমি চট্টগ্রামে অবস্থান করেছি। ব্যানার-পোস্টার ও লিফলেটের মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়েছি।
২০১৪ সালের নির্বাচনে গুলশান-বনানী আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আলেচনায় উঠে আসেন আবুল কালাম। সেবারের নির্বাচনে আসনটি থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলে আবুল কালামের সংসদ সদস্য হওয়া নিশ্চিত হয়ে যায়।
এর আগে নবম সংসদের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির বিরোধিতা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত হয় বিএনএফ। দলটি ইসিতে নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সময় বিএনপির লোগো এবং 'ধানের শীষ' প্রতীকের আদলে 'গমের শীষ' প্রতীক দিয়ে আবেদন করে। নিবন্ধনের বিধিমালা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের, মাঠ পর্যায়ের প্রাথমিক অনুসন্ধানে দলটি প্রয়োজনীয় কাঠামো প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়। পরে সময় বাড়িয়ে বিএনএফকে নিবন্ধন দেওয়া হয়। তবে ইসি দলটিকে 'টেলিভিশন' প্রতীক বরাদ্দ করে।
গত বছরের নভেম্বরে সংসদ সদস্য মঈনউদ্দীন খান বাদলের মৃত্যুতে শূন্য হয় চট্টগ্রাম-৮ আসনটি। গত ১৩ জানুয়ারি এই আসনে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ নির্বাচনে আবুল কালাম ছাড়াও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন (চেয়ার) ৯৯২ ভোট, ন্যাপের বাপন দাশগুপ্ত (কুঁড়েঘর) ৬৫৬ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ এমদাদুল হক (আপেল) ৫৬৭ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। নির্বাচনে ৮৭ হাজার ২৪৬ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমদ।
মন্তব্য করুন