রাজশাহীর বাঘায় স্কুলপড়ুয়া ভাগ্নিকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় নাজমুল হোসেন নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দুই নারীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাঘা-লালপুর উপজেলা সীমান্তের সুলতানপুর ও মনিহারপুর গ্রামের ভোলার মোড়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার উত্ত্যক্তের শিকার ওই ছাত্রীর স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন। বিক্ষোভকালে তারা খুনিদের ফাঁসির দাবি জানান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- বাঘার সুলতানপুর গ্রামের রফিজ উদ্দিনের স্ত্রী রফিজা বেগম, রানা আলীর স্ত্রী রিতা বেগম, লালপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুরের আবুল কাশেমের ছেলে জিল্লুর রহমান, মনিহারপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে নাজমুল, আমজাদ হোসেনের ছেলে সজীব আহমেদ ও নজরুল ইসলাম। উত্ত্যক্তকারী মূল আসামি মনিহারপুর গ্রামের আরজেদ আলী ওরফে ভোলার ছেলে সুমন পলাতক। 

স্থানীয়রা জানান, বাঘার পার্শ্ববর্তী লালপুর উপজেলার মনিহারপুর গ্রামের শাহজাহান আলী ওরফে বাদশা মাস্টারের নবম শ্রেণি পড়ূয়া মেয়েকে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করে একই গ্রামের আরজেদ আলী ওরফে ভোলার ছেলে সুমন। এ নিয়ে সুমনের বাবার কাছে অভিযোগ করেছিলেন বাদশা মাস্টার। তাতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে সুমন সম্প্রতি ওই মেয়েটিকে পথেঘাটে আটকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। সর্বশেষ মঙ্গলবার বিকেলে ওই ছাত্রী পাশের সুলতানপুর গ্রামে নানাবাড়ি যাওয়ার পথে তাকে থামিয়ে উত্ত্যক্ত করে সুমন। বিষয়টি সে তার ভাই তারিকুল ইসলাম তুষার ও মামা নাজমুলকে জানায়। তারা গিয়ে এ নিয়ে সুমনকে সতর্ক করে নওপাড়া বাজারে চলে যান। এরপর সন্ধ্যায় সুমনের নেতৃত্বে সম্রাট, সুলতান, আরিফ, নাজমুল, মিঠু ও রামকৃষ্ণপুরের কামরুলসহ ২০-২৫ যুবক বাদশা মাস্টারের বাড়িতে হামলা চালায়। তাদের মারধরে বাদশা মাস্টার (৫০) আহত হন। বখাটেরা সেখান থেকে বেরিয়ে নাজমুল ও তারিকুলকেও ভোলার মোড় এলাকায় পেয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। স্থানীয়রা নাজমুল ও তার ভাগ্নেকে উদ্ধার করে বাঘা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসক নাজমুলকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা আজিজুর রহমান বাদী হয়ে ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন।

এদিকে স্কুলের শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত, তার মামাকে হত্যার প্রতিবাদ ও খুনিদের ফাঁসির দাবিতে বাঘার খানপুর জেপি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বুধবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান, সহকারী শিক্ষক আব্দুল মান্নান, শিক্ষার্থী শুভ জামান সৌরভ আহমেদ প্রমুখ।

বাঘা থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, মূল আসামি পলাতক। তাকেসহ বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।