সকাল ৬টা। চারপাশে ঘন কুয়াশা। দশ হাত দূরত্বের বস্তুও ঠিকমতো দেখা যাচ্ছে না। পরিবেশের এমন বিরূপতার সুযোগে প্রাইভেট পড়তে যাওয়া এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত যুবকের নাম সেকান আলী। সে যাদুরচর ইউনিয়নের উত্তর লালকুড়া গ্রামের উমর আলী ছেলে। সেকান বিবাহিত এবং তার দুই সন্তান আছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন যুবলীগ নেতাসহ প্রভাবশালীরা নামমাত্র শাসন করে ওই বখাটেকে ছেড়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর বাবা জানান, সামনে এসএসসি পরীক্ষা হওয়ায় প্রতিদিনের মতো বুধবার সকালে হেঁটে প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছিল তার মেয়ে। পথে পেছন থেকে মেয়েকে জাপটে ধরে পার্শ্ববর্তী ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণচেষ্টা চালায় বখাটে সেকান। এ সময় মেয়ের চিৎকারে পাশে থাকা লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানতে পেরে দ্রুত ঘটনাস্থলে যান তিনি। এ সময় মেয়ে আতঙ্কিত থাকায় তিনি তাকে তাৎক্ষণিক বাড়ি পাঠিয়ে দেন।

সেকান আলীর কাছ থেকে ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেন স্থানীয় যুবক এনামুল ও তার বাবা গফুর। তারা জানান, ঘটনার সময় তারা জমিতে কাজ করছিলেন। হঠাৎ ওই কিশোরীর চিৎকারে তারা ছুটে এসে দেখেন, সেকান তাকে জাপটে ধরে ভুট্টা ক্ষেতে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তখন তারা তার হাত থেকে তাকে উদ্ধার করেন এবং মেয়েটির বাবার কাছে খবর পাঠান।

স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার কথা স্বীকার করে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টা নয় তার গায়ের চাদর টেনে ধরা হয়েছিল। আমরা ওই ছেলেকে 'শাসন' করে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি।

যুবলীগ যাদুরচর ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদক সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, এটা তেমন বড় কোনো ব্যাপার নয়। স্থানীয় চেয়ারম্যান, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাদের পরামর্শক্রমে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে।

রৌমারী থানার ওসি আবু মো. দিলওয়ার হাসান ইনাম সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার খবর পাওয়ার পর থানা থেকে পুলিশ সদস্য পাঠানো হয়েছিল। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মীমাংসা করায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিভাবক এ ব্যাপারে থানায় কোনো অভিযোগ করেননি।