- সারাদেশ
- খাবার টেবিলে ফিরছে দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির মাছ
খাবার টেবিলে ফিরছে দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির মাছ
প্রজনন ও চাষাবাদ কৌশল উদ্ভাবন এবং অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার ফলে দেশীয় অনেক বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির মাছ আবারও খাবার টেবিলে ফিরে আসছে। ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) বিলুপ্তপ্রায় অনেক মাছের প্রজনন ও চাষাবাদ কৌশল উদ্ভাবন করায় এসব মাছের পোনা প্রাপ্তি সহজতর হয়েছে। ফলে অনেকে এসব মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ব্যবহার করে এখন দেশের শতাধিক হ্যাচারিতে দেশীয় প্রজাতির মাছের পোনা উৎপাদন করা হচ্ছে। উৎপাদিত এসব পোনা চাষাবাদে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে সাম্প্রতিককালে বাজারে বিপন্ন প্রজাতির পাবদা, গুলশা, টেংরা, মেনি, চিতল, ফলি ইত্যাদি মাছের প্রাপ্যতা যেমন বেড়েছে, দামও নেমে এসেছে সহনশীল পর্যায়ে। পাবদা মাছ ১/২ বছর আগেও যেখানে প্রতি কেজি ১ হাজার থেকে ১২শ' টাকায় বিক্রি হতো, তা এখন ৪/৫শ' টাকায় নেমে এসেছে।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা যায়, ইনস্টিটিউট থেকে এ পর্যন্ত ২০ প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় মাছের প্রজনন ও চাষাবাদ কৌশল উদ্ভাবন করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- পাবদা, গুলশা, টেংরা, মেনি, ফলি, চিতল, গুতুম, বালাচাটা, গুজি, আইড়, কুচিয়া, খলিশা, গনিয়া, কালিবাউস, ভাগনা, মহাশোল ও দেশি পুঁটি। এ ছাড়াও বর্তমানে ইনস্টিটিউটে রানী মাছ, কাকিলা, গজার, শাল বাইম, বৈরালী মাছ, আঙ্গুস ও খোকসা মাছ এবং উপকূলীয় এলাকার কাইন মাগুর (কাউন) মাছের প্রজনন ও চাষ কৌশল উদ্ভাবনের জন্য গবেষণা চলছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারে বর্তমানে ইনস্টিটিউটের যশোর, সৈয়দপুর ও ময়মনসিংহ গবেষণা কেন্দ্র থেকে গবেষণা পরিচালনা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অভ্যন্তরীণ উম্মুক্ত জলাশয় সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় দেশীয় মাছের প্রজনন ও বিচরণক্ষেত্র ইতোমধ্যে অনেক বিনষ্ট হয়ে গেছে। ফলে প্রাকৃতিক জলাধার যেমন বিল, হাওড়, খাল-বিলে ও নদ-নদীতে এসব মাছের প্রাপ্যতা হ্রাস পেয়েছে। মৎস্য অধিদপ্তর অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এসব দেশীয় মাছ সংরক্ষণ ও উন্নয়নে কাজ করছে।
মন্তব্য করুন