কুষ্টিয়ার খোকসার কৃষক সনজীৎ সরকারকে গ্রাম্য সালিশে শারীরিক নির্যাতন, জরিমানা ও তার পরিবারকে একঘরে করার ঘটনায় অভিযুক্ত গ্রাম্য মাতবরদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে খোকসা থানা পুলিশ এ মামলা রেকর্ড করে। তবে একই রাতে থানায় পাল্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে ওই কৃষকের বিরুদ্ধেও।

উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের সনজীৎ সরকারের সঙ্গে একই গ্রামের বিভূতি পোদ্দারের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ধস্তাধস্তি হয়। এ নিয়ে গ্রীজা ঘোষের বাড়িতে চিত্তরঞ্জন সরকারের সভাপতিত্বে সালিশে সনজীৎ সরকারকে ২৫ বেত্রাঘাত (জিগে গাছের ডাল দিয়ে) ও ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এতে সনজীৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরই মধ্যে ধার্য করা জরিমানার ১৫ হাজার টাকা দিতে না পারায় সনজীতের পরিবারকে সমাজচ্যুত করা হয়।

এ ঘটনায় সমকালে মঙ্গলবার 'মাতবরদের এত ক্ষমতা' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে পুলিশ।

সনজীৎ ও প্রতিপক্ষ সমাজপতিদের থানায় ডাকা হয় মীমাংসার জন্য। তবে গভীর রাত পর্যন্ত দেনদরবারের পরও ভুক্তভোগী কৃষক বেঁকে বসলে পুলিশ তার দায়ের করা মামলা রেকর্ড করে। মামলায় প্রথম ও দ্বিতীয় সালিশের সভাপতি চিত্তরঞ্জন সরকার, জয়প্রকাশ সরকার, শ্যামল সাহা, স্বরূপ সরকার ও কল্যাণ সরকারকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে শ্যামল সরকারকে পুলিশ আটক করে বুধবার আদালতে পাঠিয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার রাতে সনজীৎ সরকার ও তার ছেলে সৌমেন সরকারের নামে পাল্টা মামলা করেন বিভূতি পোদ্দার। এ বিষয়ে বিভূতি পোদ্দারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

খোকসা থানার ওসি মজিবর রহমান বলেন, বিভূতিকে মেরে কৃষক প্রথম অপরাধ করেছে। তার পর তাকে সালিশে মারা হয়েছে। দুটি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। তাই পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। কেউ মামলা দিলে পুলিশের কিছু করার থাকে না।