ছেলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার গুজব, মৃত্যুর কোলে মা

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পাতাখালি গ্রামের রতন রপ্তান আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন ভারতে। গত সোমবার দুপুরে দেশে ফেরেন। ভোমরা স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশনে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় গায়ে জ্বর ও সর্দি-কাশি থাকায় তাকে নেওয়া হয় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে। এরই মধ্যে এলাকায় গুজব রটে- রতন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, পুলিশ তাকে গুলি করে মেরে ফেলবে। একথা শুনেই চিন্তিত হয়ে পড়েন রতনের মা রেনুকা রপ্তান (৫৬)। উদ্বিগ্ন রেনুকা সেরাতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।  

পদ্মপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, 'পরীক্ষার জন্য রতনকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রক্ত নেওয়ার পর কাউকে কিছু না বলে রতন বাড়ি ফিরে আসে। পরে রতনকে খোঁজাখুজি শুরু করে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন। শ্যামনগর স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আমাকেও ফোন করা হয় রতনের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার জন্য।'

তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে এলাকায় এক শ্রেণির লোক গুজব ছড়িয়ে দেয় বিমান রপ্তানের ছেলে রতনের করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে, পুলিশ রতনকে গুলি করে মেরে ফেলবে। এসব শুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন রতনের মা রেনুকা। রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।

এ বিষয়ে শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অজয় সাহা বলেন, করোনাভাইরাস সন্দেহে রতনকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে কাউকে কিছু না জানিয়ে সে পালিয়ে যায়। পরে স্বাস্থ্য বিভাগ ও পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে খোঁজাখুঁজি করা হয়। তবে রতনের শরীরে করোনাভাইরাসের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। এরই মধ্যে গুজবের কারণে তার মা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।

সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন হুসাইন শাফায়াত বলেন, রতনের শরীরে করোনাভাইরাসের কোনো জীবাণু পাওয়া যায়নি। তবে এলাকায় গুজবের কারণে রতনের মা হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন। বিষয়টি মর্মান্তিক ও দুঃখজনক।