নিয়োগ বাণিজ্য ও টেন্ডারবাজির মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য অবশেষে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল কান্তি বিশ্বাসকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি দুদকের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ে হাজির হওয়ার জন্য তাকে লিখিত নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

যুবলীগ নেতা চঞ্চল কান্তি বিশ্বাস শনিবার এ সংক্রান্ত দুদকের চিঠি হাতে পেয়েছেন বলে সমকালকে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এম খোকন কাজী।

এর আগে গত ১২ জানুয়ারি নাজিরপুর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল কান্তি বিশ্বাসের নানা অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডারবাজির মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়ে দৈনিক সমকালে ‘চঞ্চল এখনও চঞ্চল’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত ওই সংবাদে উল্লেখিত অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের স্বারক নং-০০.০১.৯০০.৬৫২.০১.০০৪.২০.৪৪০৪, তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০২০ ইং মোতাবেক দুর্নীতি দমন কমিশনের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয় প্রেরণ করা হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয় বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল লতিফ হাওলাদারকে তদন্তকারী অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দুদকের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এছাড়া অভিযোগের সুষ্ঠ অনুসন্ধানের স্বার্থে নাজিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মাহিদুল ইসলাম ও উপজেলার কবিরাজ বাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সতিন্দ্র নাথ ঢালীকে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারী সকাল ১০ টায় দুদকের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ে তদন্তকারী অফিসারের নিকট হাজির হয়ে তাদের বক্তব্য প্রদানর জন্য লিখিত নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাজিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মাহিদুল ইসলাম।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএমএ আউয়াল এমপি হওয়ার পরে যুবলীগ নেতা চঞ্চল কান্তি বিশ্বাসের উল্লেখযোগ্য তেমন কোন সম্পদ ছিল না। অথচ গত ১০ বছরে তিনি নামে বেনামে অঢেল সম্পদ করেছেন। নাজিরপুর উপজেলা সদরসহ বাগেরহাট ও কোলকাতার অশোকনগর মিলিয়ে তার ৬/৭টি বাড়ি রয়েছে। এছাড়া জাহাজ ব্যবসা, ক্লিনিক ও প্যাথলজি ব্যবসা নানা ব্যবসা রয়েছে।

অপর একটি সূত্র জানায়, স্বাগতা এন্টারপ্রাইজ নামে তার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সাবেক এমপি আউয়াল ক্ষমতায় থাকা কালে গত ১০ বছরে তার ওই লাইসেন্সে সর্বোচ্চ ৭ থেকে ৮ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। ওই কাজে সে যে টাকা ব্যবসা করেছে তা দিয়ে কোন ভাবেই এত সম্পদ করার সুযোগ নেই।

উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এম খোকন কাজী বলেন, ‌‌‘আমি যুবলীগের সভাপতি হয়েও গত ১০ বছরে কিছুই করতে পানিনি। আর অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল কান্তি বিশ্বাস সাবেক এমপি একেএমএ আউয়ালের আর্শিবাদে নানা অনিয়মের মাধ্যমে গত ১০ বছরে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন।’