নরসিংদী থেকে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১। শুক্রবার রাতে নরসিংদী সদর থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। মারিয়া আক্তার মন্টি নামে এক নারীসহ গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মো. অভিত মিয়া, মো. পাপ্পু মিয়া ও মো. বাদল মিয়া। তারা সবাই নরসিংদী সদর থানার স্থায়ী বাসিন্দা।

শনিবার র‌্যাব-১১-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গ্রেপ্তারকৃতরা পেশাদার অপহরণকারী চক্রের সদস্য। তারা সমাজের উচ্চবিত্তদের অপহরণের পর নির্যাতনের ভিডিও তৈরি করে। পরে সেই ভিডিও অপহূতের পরিবারের কাছে পাঠিয়ে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায় করে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর নরসিংদী আদালতের সামনে থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে একটি মাইক্রোবাস নিয়ে মো. রাসেল নামে এক যুবককে অপহরণ করা হয়। পরে একটি ভাড়া করা ফ্ল্যাটে নিয়ে তাকে হাত-পা বেঁধে মারধর করে অপহরণকারীরা। নির্যাতনের সেই ভিডিও ধারণ করে রাসেলের পরিবারের কাছে পাঠিয়ে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা। টাকা না দিলে রাসেলকে হত্যারও হুমকি দেয় তারা। পরে ওইদিন রাতেই বিকাশের মাধ্যমে ৬০ হাজার টাকা পাঠায় রাসেলের পরিবার। বাকি টাকা নগদ শোধ করবে বলে তাকে নিয়ে আসতে বলে। পরদিন রাতে অবশিষ্ট টাকা নিতে একটি মাইক্রোবাসে নরসিংদীর শাপলা চত্বরে আসার পর রাসেল কৌশলে নেমে 'ডাকাত ডাকাত' বলে চিৎকার দিলে অপহরণকারীরা তাকে রেখেই দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর সুস্থ হয়ে র‌্যাব-১১-এর কাছে অভিযোগ দেন রাসেল। অভিযোগ পেয়ে র‌্যাব-১১-এর বিশেষ গোয়েন্দা দল নজরদারির মাধ্যমে অপরাধীদের শনাক্ত করে। পরে শুক্রবার অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের ওই সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছে, অপহরণের উদ্দেশ্যে নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ছদ্মবেশে মাইক্রোবাস নিয়ে ঘুরে বেড়ায় তারা। সুযোগ বুঝে বিভিন্ন এলাকার বিত্তশালী লোকদের অপহরণের পর গোপন স্থানে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পরিবারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা মুক্তিপণ হিসেবে আদায় করে তারা।