রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লির তৃতীয় বাসিন্দা হিসেবে নিলু পারভীন নামে এক নারীর জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। 

শুক্রবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়। শনিবার দুপুরে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তবে এবারও জানাজায় ইমামতির জন্য খুঁজে পাওয়া যায়নি স্থানীয় কোনো মৌলভীকে। তাই পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে গোয়ালন্দ ঘাট থানা জামে মসজিদের ইমাম আবু বকর সিদ্দিক জানাজা পড়ান। স্থানীয় মৌলভীরা কোনো যৌনকর্মীর জানাজা না পড়ানোর ব্যাপারে এখনও কঠোর অবস্থানে।

এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমানের উদ্যোগে শরিয়া মোতাবেক দৌলতদিয়া যৌনপল্লির বাসিন্দা হামিদা বেগমের দাফন সম্পন্ন হয়। এ নিয়ে পর দিন সমকালে সংবাদ প্রকাশ হয়। ইসলামী চিন্তাবিদরাও যৌনকর্মীর জানাজার সমর্থনে তাদের মতামত প্রকাশ করেন।

জানা যায়, যৌনকর্মীর এ জানাজায় ইমামতি করার জন্য দৌলতদিয়ার কোনো মৌলভীকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। গত ২ ফেব্রুয়ারি গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান দৌলতদিয়া রেলস্টেশন জামে মসজিদের ইমাম গোলাম মোস্তফা জানাজা পড়ান। কিন্তু পরবর্তীতে দৌলতদিয়া এলাকার অন্য মসজিদের ইমামরা মিলে এ বিষয়ে অভিযোগ করতে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপারের কাছে যান। তবে সেখানেও যৌনকর্মীর জানাজা না পড়ানোর ব্যাপারে তারা শরিয়া অনুযায়ী কোনো ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হন।

আগে এখানকার যৌনকর্মীদের কেউ মারা গেলে তাদের জানাজা হতো না। লাশ হয় নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হতো, অথবা মাটিচাপা। তবে বর্তমানে সেই প্রথা ভাঙতে শুরু করেছে।

শনিবার যৌনকর্মীর জানাজায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শরীফ উজ জামান, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান, পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল্লাহ আল তায়াবীর, স্থানীয় ইউপি সদস্য আ. জলিল ফকীর প্রমুখ। ওসি আশিকুর রহমান বলেন, এ ধারা অব্যাহত থাকবে।