- সারাদেশ
- নিজের বিয়ের কার্ড দিতে গিয়ে প্রাণ গেল শিক্ষিকার
নিজের বিয়ের কার্ড দিতে গিয়ে প্রাণ গেল শিক্ষিকার

স্কুলশিক্ষিকা তাছলিমা আক্তারের (২৪) বিয়ের দিন ধার্য ছিল বুধবার। দিনক্ষণ অনুযায়ী কনে ও বরপক্ষ বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। উভয় পরিবারে বইছিল সাজ সাজ রব। তবে অনুষ্ঠানের দাওয়াতপত্র সহকর্মীদের দিতে যাওয়ার পথেই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ওই শিক্ষিকা। সংসারের স্বপ্ন সড়কেই শেষ হয়ে গেল তার। পথে একটি কুকুরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ওই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মোটরসাইকেলটি। এতে মুহূর্তেই উভয় পরিবারের আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়।
শনিবার সকালে সুবর্ণচর উপজেলার কেরানীর বাজার এলাকায় চরলক্ষ্মী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সড়কের পশ্চিম পাশে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।নিহত শিক্ষিকা উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চর তোরাব আলী গ্রামের মৃত নুরের রহমানের মেয়ে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পরিবার সূত্র জানায়, মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পূর্ব চরলক্ষ্মী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাছলিমা আক্তারের সঙ্গে চরতোরাব আলী গ্রামের নুর নবীর ছেলে ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কামাল উদ্দিনের বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হয়। উভয় পরিবারের লোকজন এরই মধ্যে বিয়ের দাওয়াতপত্র বিতরণ প্রায় শেষ করেছে।
নিহতের মামা বেলাল হোসেন জানান, তাছলিমা তার সহকর্মীদের বিয়ের কার্ড দেওয়ার জন্য গতকাল সকালে তার নানাবাড়ি উপজেলার চরক্লার্ক ইউনিয়নের কেরামতপুর গ্রাম থেকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইব্রাহীম বিল্লাহর মোটরসাইকেলে ওঠেন। পথে স্থানীয় কোরানী বাজার এলাকায় তাদের মোটরসাইকেলের সঙ্গে একটি কুকুরের ধাক্কা লাগে। এতে চালক প্রধান শিক্ষক ইব্রাহীম বিল্লাহ ও পেছনে থাকা তাছলিমা ছিটকে সড়কের ওপর পড়ে যান। ঘটনাস্থলেই মারা যান তাছলিমা। প্রধান শিক্ষক অক্ষত আছেন। তাছলিমার মৃত্যুসংবাদ শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন হবু বর কামাল উদ্দিন ও তার পরিবার। এ ঘটনার পর তাছলিমার মা মজুদা বেগম সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে তাছলিমা ছিলেন সবার বড়। তিনি চাকরি করে সংসার চালাতেন।
নিহতের মামা চরক্লার্ক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবুল বাশার বলেন, বিয়ের আগমুহূর্তে তাছলিমার মৃত্যুর ঘটনা সত্যিই হৃদয়বিদারক। একটি সড়ক দুর্ঘটনা দুই পরিবারের আনন্দ ও স্বপ্ন ধুলায় মিশিয়ে দিল। শনিবার বিকেলে জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে জানাজা শেষে দাদার বাড়ি চর তোরাব আলী গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে ওই শিক্ষিকাকে দাফন করা হয়।
চরজব্বার থানার ওসি শাহেদ উদ্দিন বলেন, পরিবারের অনুরোধে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই হস্তান্তর করা হয়।
মন্তব্য করুন