- সারাদেশ
- ফেসবুকে তরুণীর ছবি দিয়ে প্রতারণা, যুবক গ্রেপ্তার
ফেসবুকে তরুণীর ছবি দিয়ে প্রতারণা, যুবক গ্রেপ্তার

সুজাউল হক
ফেসবুক প্রোফাইলে সুন্দরী তরুণীর ছবি। পরিচয় হিসেবে উল্লেখ আছে- একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তা। টাইমলাইনে রয়েছে বিভিন্ন ভঙ্গিমার একাধিক ছবি। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি একটি নকল (ফেইক) আইডি। আইডিটি চালান একজন যুবক। এই আইডির মাধ্যমে অভিনব পন্থায় প্রতারণা করে বিভিন্নজনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন ওই যুবক।
বৃহস্পতিবার নগরের বায়েজিদ বোস্তামি থানার টেক্সটাইল এলাকা থেকে সুজাউল হক নামে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার ফুলবাড়ি গ্রামের প্রয়াত আইনুল হকের ছেলে। থাকতেন চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামি এলাকায়।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ-কমিশনার বিজয় কুমার বসাক জানান, সুজাউল হক জাত প্রতারক। তরুণীর ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে আইডি খোলেন। সেখান থেকে বিভিন্ন জনকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠান তিনি। সহজাত প্রবৃত্তি অনুযায়ী নারীর প্রতি সহজে আকৃষ্ট হন পুরুষরা। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন নামি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বা ছাত্রী পরিচয়ে পুরুষদের সঙ্গে চ্যাট করতেন। এক পর্যায়ে মা বা বোন অসুস্থ, তাদের চিকিৎসার জন্য সাহায্য চেয়ে টাকা চাইতেন। এতে অনেকে মানবিক কারণে সাড়া দিতেন। বিশেষ করে মা ও বাবা দিবসকে টার্গেট করে মানবিক সাহায্যের আবেদন জানিয়ে স্ট্যাটাস দিতেন তিনি।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন সমকালকে জানান, দুই বছর আগে রাইসা মেহজাবিন নামে একটি আইডি খোলেন সুজাউল হক। সেখানে নিজেকে একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থার প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর হিসেবে উল্লেখ করেন। ওই আইডি থেকে বিভিন্ন জনকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠান তিনি। এরপর হাসপাতালের আইসিইউতে থাকা রোগীর ছবি সংগ্রহ করে নিজের মা বা বোন চিকিৎসাধীন উল্লেখ করে স্ট্যাটাস দিয়ে আর্থিক সাহায্য চাইতেন। এতে অনেকে মানবিক কারণে সাহায্যে এগিয়ে আসতেন। এছাড়া ফেসবুকে বন্ধুত্বের ফাঁদ পেতেও বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে প্রায় শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। সর্বনিম্ন পাঁচশ' টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে সুজাউল।
সুজাউলকে গ্রেপ্তার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া কোতোয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক সজল কান্তি দাশ সমকালকে বলেন, সুজাউল সর্বশেষ রাইসা মেহজাবিন পরিচয়ে তার মা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জানিয়ে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৩২ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। পরে হাসপাতালে তার মায়ের মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে লাশ মেডিকেল থেকে আনার কথা বলে আরও ২০ হাজার টাকা সাহায্য চান। এতে ওই ব্যক্তির সন্দেহ হলে তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানান। পরে ওই প্রতারককে শনাক্ত করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মন্তব্য করুন