স্বাধীনতার মাস মার্চের প্রথম দিনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা মারামারির মধ্য দিয়ে পার করেছেন। উভয়পক্ষ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রোববার দুপুর দেড়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় লেডিস হলের ঝুপড়িতে মারামারির শুরু করে। বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত তিন দফা মারামারি, ইট পাটকেল নিক্ষেপ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় জড়ায় দুই পক্ষ। উভয় পক্ষের সংঘাতে নয় ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়েছেন।

মারামারিতে জড়ানো শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের অনুসারী পক্ষটি ক্যাম্পাসের শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক সংগঠন ‘সিএফসি’ ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুর পক্ষটি ‘সিক্সটি নাইন’ গ্রুপ নামে পরিচিত।

আহতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মেহেদী হাসান, মো. পাভেল, মিলন ও সুমন মির্জা, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের আবদুল্লাহ জোনায়েদ রেদোয়ান, রসায়ন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষাথী মেহরাব উদ্দিন মিনহাজ, একই বর্ষের আইন বিভাগের মাহফুজ আল মামুন, ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শোয়ায়েব আখতার সুলভ এবং একই শিক্ষাবর্ষের ইসলামিক ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী অর্ক আহত হন। আহতরা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

জানা যায়, দুপুরে একাউন্টিং বিভাগের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট খেলার নেতৃত্ব নিয়ে লেডিস ঝুপড়িতে এ মারামারির সূত্রপাত ঘটে। এ সময় সভাপতির অনুসারীরা সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী চারজনকে মারধর করে। এর জেরে সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ঝুপড়িতে সভাপতির অনুসারী এক কর্মীকে মারধর করে। এ ঘটনা জানাজানি হলে শাহ আমানত হলের সামনে সভাপতির অনুসারী ও শাহজালাল হলের সামনে সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা জড়ো হয় এবং উভয়ের মধ্যে ইট-পাটকেল ছোড়াছুড়ি হয়। পরে পুলিশ এসে উভয় পক্ষকে ধাওয়া দিয়ে হলে ঢুকিয়ে দেয়। এ সময় পুলিশ শাহজালাল হলের গেট থেকে একটি রামদা উদ্ধার করে। পরে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আবারও সিক্সটি নাইনের কর্মীরা জিরো পয়েন্ট এলাকায় সিএফসির চারজনকে মারধর করে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ ইয়াকুব বলেন, ‘ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। উভয় পক্ষের সিনিয়রদের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধান করা হবে। যদি তারা না বসে তাহলে আমরা কঠোর পদক্ষেপে যেতে বাধ্য হবো। স্বাধীনতার মাসের প্রথম দিনে এ রকম মারামারির ঘটনা মোটেও কাম্য না।’

চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মশিউদৌলা রেজা বলেন, ‘তুচ্ছ একটি ঘটনাকে নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। বিষয়টি পুলিশ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডিসহ প্রশাসন দেখছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ‘ডিপার্টমেন্টকেন্দ্রিক একটি বিষয় নিয়ে জুনিয়রদের মধ্যে ভুলবোঝাবুঝি হয়েছে। আমরা সিনিয়ররা বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।’