ওয়াজ মাহফিলে নিয়মিত যৌতুক, নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বললেও নিজের বেলায় ভিন্ন মাওলানা এ এইচ এম সোয়াইব হোসাঈন সিদ্দিকী। অভিযোগ রয়েছে, যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই মারধর করতেন স্ত্রীকে। তবে এবার যে কাণ্ড তিনি ঘটিয়েছেন তা আরও ভয়াবহ। লোহার অ্যাঙ্গেল দিয়ে পিটিয়ে স্ত্রী দুই হাত ভেঙে দেওয়ার পর তাকে ঘরে আটকে রেখে তিনি গিয়েছেন ওয়াজ করতে!

রোববার রংপুরের পীরগঞ্জে একটি ইসলামী জলসায় ওয়াজ করতে গেলে জনতা তাকে আটকে উত্তম-মধ্যম দেয়। পরে তাকে থানায় সোপর্দ করা হয়।

রাতে হাফেজ মাওলানা এ এইচ এম সোয়াইব হোসাঈন সিদ্দিকীকে আসামি করে গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর থানায় মামলা করেছেন তার শাশুড়ি কোহিনুর বেগম।

হুজুর স্বামীর মারপিটে আহত স্ত্রী সোমিয়া ছিদ্দিকা- সমকাল

থানা সূত্র জানায়, কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার মধ্যচর বারুইটারী গ্রামের আবদুল হাই মিয়ার ছেলে হাফেজ মাওলানা এ এইচ এম সোয়াইব হোসাঈন সিদ্দিকীর সঙ্গে দেড় বছর আগে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার দূরা মিঠিপুর গ্রামের মৃত ইব্রাহিম সরকারের মেয়ে সোমিয়া ছিদ্দিকার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে মাওলানা সিদ্দিকী তার স্ত্রীর পরিবারের কাছে যৌতুক দাবি করতে থাকেন। যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে প্রায়ই মারপিট করতেন তিনি। গত ১৮ জানুয়ারি লোহার অ্যাঙ্গেল দিয়ে পিটিয়ে স্ত্রীর দুই হাতের কবজির ওপরে ভেঙে দেন তিনি। এরপর তাকে ঘরে আটকে রেখে ইসলামী জলসায় ওয়াজ করার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। পরে সোমিয়ার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে রংপুরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

এদিকে ওয়াজ করতে যাওয়ার পর স্ত্রী ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন মাওলানা সিদ্দিকী। কোনোভাবেই তার সন্ধান মিলছিল না। প্রায় দেড় মাস পর রোববার রংপুরের পীরগঞ্জে একটি ইসলামী জলসায় ওয়াজ করার জন্য অতিথি হয়ে আসেন তিনি। খবর পেয়ে স্ত্রী সোমিয়ার পরিবারসহ আশপাশের লোকজন একত্র হয়ে তাকে আটক করে উত্তম-মধ্যম দেয়। পরে সাদুল্যাপুর থানা পুলিশের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হয়।

সাদুল্যাপুর থানার ওসি মাসুদ রানা জানান, মারপিট করায় ওই গৃহবধূর দুই হাত ভেঙে গেছে। অভিযুক্ত মাওলানা সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।