পাবনায় চার বছরের শিশু সুমনা হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে ১১ বছরে শিশুঘাতক। গত বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় সে। এর আগে নিখোঁজের তিন দিন পর গত মঙ্গলবার সুমনার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সুমনা জেলার ফরিদপুর উপজেলার সোনাহারা গ্রামের সজীব হোসেনের মেয়ে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) জালাল উদ্দীন ও ফরিদপুর থানার ইনচার্জ এসএম আবুল কাসেম আজাদ জানান, সুমনার লাশ উদ্ধারের পর প্রতিবেশী ওই শিশু ও তার বাবা-মাকে আটক করা হয়। থানায় জেরার একপর্যায়ে ওই শিশুকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে হত্যার কথা স্বীকার করে পুরো ঘটনার বর্ণনা দেয়। ওই সময় শিশুটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ছিল এবং তার ভেতর কোনো ধরনের ভীতি দেখা যায়নি বলেও জানান তারা।

ওই শিশু তার বর্ণনায় জানিয়েছে, গত শনিবার সকাল ১০টার দিকে বাড়ির পাশের ইটভাটার কাছে সুমনা ও তার ছোট ভাই আজাদ (৩) খেলা করছিল। খেলার একপর্যায়ে আজাদকে ধাক্কা দেয় সুমনা। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে গলা চেপে ধরলে কিছুক্ষণ পর সুমনা নিস্তেজ হয়ে পড়ে। মৃত্যু নিশ্চিত হলে লাশ কাঁধে নিয়ে পাশেই তার ফুপার নির্মাণাধীন বাড়িতে নিয়ে যায় সে। ওই বাড়ির চাবি আগে থেকেই তার কাছে ছিল। পরে দরজা খুলে ঘরের মেঝেতে লাশ রাখে। এরপর সে স্বাভাবিকভাবে তার ছোট ভাই ও অন্যদের সঙ্গে খেলতে থাকে। তবে মাঝে কয়েকবার সে জানালা দিয়ে সুমনার লাশ দেখতে যায় এবং লাশের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে।

সে আরও জানায়, গত সোমবার বিকেলে সে লক্ষ করে, লাশের ওপর মাছি বসছে এবং দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। পরে ধরা পড়ার ভয়ে সে ঘরের ভেতরে থাকা বস্তার বালি ফেলে তার মধ্যে সুমনার লাশ ভরে বারান্দায় নিয়ে যায়। লাশটি পাশের ক্ষেতে ফেলে দেওয়ার উদ্দেশ্য থাকলেও ওই সময় ইটভাটার লোকজন কাজ করায় তা সম্ভব হয়নি।


তবে সুমনার বাবা সজীব হোসেন অভিযোগ করেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ওই শিশুর বাবা-মাও জড়িত। তা ছাড়া একটি শিশুর একার পক্ষে হত্যা করার পর লাশ গুম করার চেষ্টা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।