- সারাদেশ
- কয়েক বাজার ঘুরেও কৃষিপণ্য বেচতে পারছে না কৃষক
কয়েক বাজার ঘুরেও কৃষিপণ্য বেচতে পারছে না কৃষক

ভ্যানে কৃষিপণ্য নিয়ে বিভিন্ন বাজারে ঘুরে বিক্রির চেষ্টা করছেন কৃষকরা। ছবি: সমকাল
কয়েক বাজার ঘুরেও কৃষিপণ্য বেচতে না পারছে না কৃষক। রবি ফসলের ভরা মৌসুমে করোনাভাইরাসের প্রভাবে হাট-বাজার বন্ধ থাকায় কৃষিপণ্য বিক্রি করতে না পারায় দুশ্চিন্তায় তারা- কিভাবে করবেন কৃষিশ্রমিকের টাকা পরিশোধ!
কৃষিশ্রমিকদের ‘দিন আনে, দিন খায়’ অবস্থা। তাই তারা টাকার জন্য বারবার কৃষকের বাড়িতে যাচ্ছেন। ঝিনাইদহের শৈলকুপার বিভিন্ন কৃষকের মুখে তাই দুঃশ্চিন্তার ছাপ।
পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক নওশের হোসেন জানান, এখন রবি ফসল পিঁয়াজ, গম, মশুর,ছোলা, মটর, খেশারিসহ অন্যান্য ফসল ঘরে তোলার সময়। কামলা দিয়ে তারা ঠিকই ফসল ঘরে তুলেছেন। কিন্ত হঠাৎ করেই করোনার প্রভাবে হাট-বাজার বন্ধ থাকায় বিভিন্ন হাট ঘুরেও তা বিক্রি করতে পারছেন না। এ কারণে কামলার টাকাও পরিশোধ করতে পারেছেন না।
আউশিয়া গ্রামের চাষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, '৫/৭ দিন উপজেলার বিভিন্ন হাটে পণ্য নিয়ে ঘোরাঘুরি করেছি। কিন্ত কোনো হাটেই পণ্য বেচতে পারিনি। বরং এই সময়ে পরিবহন খরচ অনেক বেশি গুনতে হয়েছে। পণ্য বেচতে না পারায় কামলা, জমি চাষ, সার, ওষুধের টাকা পরিশোধ করতে পারছি না। আর পরবর্তী ফসল রোপনের কথাও ভাবতে পারছি না।'
এদিকে বেশিরভাগ চাষীর ঘরে অতিরিক্ত পিঁয়াজ রাখার জায়গা না থাকায় গরমে তা পচন ধরার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উপজেলার নাদপাড়া, চরআউশিয়া, ভাটবাড়িয়া, কাতলাগাড়ীসহ বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে।
আউশিয়া গ্রামের দিনমুজুর আনিচুর রহমান বলেন, 'সারাদিন কাজ করে মাঠ থেকে বিভিন্ন ফসল কৃষকের ঘরে তুলে দিয়ে এখন মজুরির টাকা পাচ্ছি না। কোথাও কাজটাজও নাই। চাষীরা বলছে, তারা পণ্য বিক্রি করতে পারছে না বলে টাকা দিতে পারছে না।'
শৈলকুপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার কুণ্ডু জানান, তিনিও গ্রামে গ্রামে কৃষকদের এমন চিত্র দেখতে পেয়েছেন। চাষীরা পণ্য বিক্রি করে বিভিন্ন দেনা পরিশোধ করে থাকেন। কিন্ত প্রশাসন করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে বাজার বন্ধ রেখেছে। বিকল্প উপায়ে দূরত্ব বজায় রেখে কৃষিপণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করা যায় কি-না- এটা নিয়ে তিনি প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, 'এটা জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত। কৃষিপণ্য বিক্রির সুযোগ দিলে সেখানে ব্যাপক লোক সমাগম ঘটবে। তাই হাট-বাজার বন্ধ রাখা হয়েছে।'
মন্তব্য করুন