- সারাদেশ
- করোনাতেও ব্যতিক্রম চট্টগ্রাম বন্দর
করোনাতেও ব্যতিক্রম চট্টগ্রাম বন্দর
আস্তে আস্তে কমলেও গত বছরের তুলনায় এখনও বেশি আছে আমদানি-রপ্তানি

করোনাভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতি লণ্ডভণ্ড করে দিলেও এখনও তার প্রভাব সেই হারে পড়েনি চট্টগ্রাম বন্দরে। বরং করোনাতেও ব্যতিক্রম উদাহরণ তৈরি হয়েছে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে। সামনে রমজান ও বাজেট থাকায় এখনও গতিশীল আছে দেশকে সর্বোচ্চ রাজস্ব এনে দেওয়া এ প্রতিষ্ঠান। এদিকে দুই বছরের তুলনামূলক চিত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৯ সালের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চের তুলনায় ২০২০ সালের একই সময়ে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় বাড়লেও এখন প্রতিমাসে আস্তে আস্তে কমছে আমদানি-রপ্তানি দুটিই। বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, করোনার প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী না হলে এবং প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা যথাযথভাবে পেলে সাময়িক এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন তারা। সচল রাখতে পারবেন বন্দরের গতির চাকাও।
জানতে চাইলে নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, 'করোনার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবো আমরা। তবে এ সংকট যদি সাময়িক হয়, তাহলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে আমাদের দেশের অর্থনীতি। আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা যুক্ত আছেন, তাদের চাঙ্গা রাখতে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিভিন্ন সেক্টরকে উজ্জীবিত করতে ঘোষণা করেছেন ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ হলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমও স্বাভাবিক হবে শিগগির।' চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ বলেন, 'করোনা আতঙ্কের মধ্যেও ২৪ ঘণ্টা সচল আছে চট্টগ্রাম বন্দর। ব্যবসায়ীরা পণ্য খালাস কার্যক্রমে গতি বাড়ালে বন্দর আরও গতিশীল হবে। এখনও ধারণ ক্ষমতার মধ্যে আছে কনটেইনারের সংখ্যা। পণ্য খালাস বাড়লে আমাদের কোনো অসুবিধা হবে না। সামনে বাজেট ও রমজান আছে। এ সময় পণ্যবোঝাই কনটেইনারের সংখ্যা বাড়ে। এটি মনে রাখতে হবে ব্যবসায়ীদের।'
পোর্ট ইউজারস ফোরামের চেয়ারম্যান ও চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহাবুবুল আলম বলেন, 'এখন বন্দরে যেসব পণ্য আসছে, সেগুলোর এলসি খোলা হয়েছে দু-তিন মাস আগে। করোনাভাইরাস জানুয়ারি থেকে প্রকট আকার ধারণ করলেও বিশ্বজুড়ে এটি প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে মার্চ মাস থেকে। এ জন্য এলসির পরিমাণ এখন কমে গেছে। এটির প্রভাব দেখা যাবে আগামী মাস থেকে। তবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত করোনা পরিস্থিতি ভালোভাবে সামাল দিতে সক্ষম হয়েছে।'
জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের তথ্য বিশ্নেষণ করে দেখা যায়, করোনার প্রভাব প্রকটভাবে পড়েনি চট্টগ্রাম বন্দরে। বরং আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এবার আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে। ২০১৯ সালের প্রথম তিন মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে ২০ ফুট দীর্ঘ কনটেইনার ওঠানামা হয় সাত লাখ ১০ হাজার ৫৬২ একক। কিন্তু ২০২০ সালের একই সময়ে কনটেইনার এসেছে সাত লাখ ৭৭ হাজার ৫৮৮ একক। এ হিসাবে আগের বছরের তুলনায় এবার প্রায় ৬৭ হাজার পণ্যভর্তি কনটেইনার বেশি এসেছে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। খোলা পণ্য ওঠানামাতেও আগের বছরকে ছাড়িয়ে গেছে চট্টগ্রাম বন্দর। ২০১৯ সালের প্রথম তিন মাসে দুই কোটি ৬৭ লাখ ৫৪ হাজার টন খোলা পণ্য ওঠানামা করলেও এবার একই সময়ে এসেছে তিন কোটি ৫ লাখ ৫৯ হাজার টন খোলা পণ্য।
গত বছরের তুলনায় আমদানি-রপ্তানি বেশি হলেও শুধু চলতি বছরের প্রথম তিন মাসের চিত্র টানলে দেখা যাচ্ছে আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণ কিছুটা কমছে। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে ২০ ফুট দীর্ঘ এক লাখ ৫২ হাজার ৪০২ কনটেইনার আমদানি পণ্য এলেও পরের দুই মাসে এসেছে যথাক্রমে এক লাখ ৩২ হাজার ৫৬০ ও এক লাখ ২০ হাজার ৮৪৬টি। আবার চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এক লাখ ৩৩ হাজার ৫৭৭ টিইইউএস রপ্তানি পণ্য গেলেও ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে গেছে যথাক্রমে এক লাখ ৯ হাজার ৩৮০ ও এক লাখ ১৮ হাজার ২৭২ টিইইউএস।
বন্দরের পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম জানান, এখন যেসব জাহাজ আসছে, সেগুলোর এলসি খোলা হয়েছিল আগে। এখনকার এলসির পণ্য আসবে এক থেকে দুই মাস পরে। তবে আগের এলসিতে যেসব জাহাজ এসেছে, সেগুলো দ্রুততম সময়ে হ্যান্ডেল করতে পেরেছি আমরা। চট্টগ্রাম বন্দরের বহরে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম যুক্ত হওয়ায় করোনার প্রভাব সেভাবে পড়েনি এখানে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি নতুন 'কী গ্যান্ট্রিক্রেন' যুক্ত হয়েছে বন্দরে। স্ট্রাডল ক্যারিয়ার ও ফর্ক লিফটও এসেছে পর্যাপ্ত। এ কারণে বেড়েছে বন্দরে কাজের গতি। করোনার কারণে শ্রমিক উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও যন্ত্রপাতি দিয়ে সেটি সামাল দিতে পেরেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। কী গ্যান্ট্রিক্রেন বন্দরে কনটেইনার ওঠানামার কাজে গতি এনেছে ব্যাপক হারে। এ জন্য আগের বছরের তুলনায় এবার জাহাজের গড় অপেক্ষমাণ সময়ও কমছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে প্রতিটি কনটেইনার জাহাজে গড় অপেক্ষমাণ সময় ছিল দুই দশমিক ৬২ দিন।
জানতে চাইলে নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, 'করোনার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবো আমরা। তবে এ সংকট যদি সাময়িক হয়, তাহলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে আমাদের দেশের অর্থনীতি। আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা যুক্ত আছেন, তাদের চাঙ্গা রাখতে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিভিন্ন সেক্টরকে উজ্জীবিত করতে ঘোষণা করেছেন ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ হলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমও স্বাভাবিক হবে শিগগির।' চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ বলেন, 'করোনা আতঙ্কের মধ্যেও ২৪ ঘণ্টা সচল আছে চট্টগ্রাম বন্দর। ব্যবসায়ীরা পণ্য খালাস কার্যক্রমে গতি বাড়ালে বন্দর আরও গতিশীল হবে। এখনও ধারণ ক্ষমতার মধ্যে আছে কনটেইনারের সংখ্যা। পণ্য খালাস বাড়লে আমাদের কোনো অসুবিধা হবে না। সামনে বাজেট ও রমজান আছে। এ সময় পণ্যবোঝাই কনটেইনারের সংখ্যা বাড়ে। এটি মনে রাখতে হবে ব্যবসায়ীদের।'
পোর্ট ইউজারস ফোরামের চেয়ারম্যান ও চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহাবুবুল আলম বলেন, 'এখন বন্দরে যেসব পণ্য আসছে, সেগুলোর এলসি খোলা হয়েছে দু-তিন মাস আগে। করোনাভাইরাস জানুয়ারি থেকে প্রকট আকার ধারণ করলেও বিশ্বজুড়ে এটি প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে মার্চ মাস থেকে। এ জন্য এলসির পরিমাণ এখন কমে গেছে। এটির প্রভাব দেখা যাবে আগামী মাস থেকে। তবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত করোনা পরিস্থিতি ভালোভাবে সামাল দিতে সক্ষম হয়েছে।'
জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের তথ্য বিশ্নেষণ করে দেখা যায়, করোনার প্রভাব প্রকটভাবে পড়েনি চট্টগ্রাম বন্দরে। বরং আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এবার আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে। ২০১৯ সালের প্রথম তিন মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে ২০ ফুট দীর্ঘ কনটেইনার ওঠানামা হয় সাত লাখ ১০ হাজার ৫৬২ একক। কিন্তু ২০২০ সালের একই সময়ে কনটেইনার এসেছে সাত লাখ ৭৭ হাজার ৫৮৮ একক। এ হিসাবে আগের বছরের তুলনায় এবার প্রায় ৬৭ হাজার পণ্যভর্তি কনটেইনার বেশি এসেছে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। খোলা পণ্য ওঠানামাতেও আগের বছরকে ছাড়িয়ে গেছে চট্টগ্রাম বন্দর। ২০১৯ সালের প্রথম তিন মাসে দুই কোটি ৬৭ লাখ ৫৪ হাজার টন খোলা পণ্য ওঠানামা করলেও এবার একই সময়ে এসেছে তিন কোটি ৫ লাখ ৫৯ হাজার টন খোলা পণ্য।
গত বছরের তুলনায় আমদানি-রপ্তানি বেশি হলেও শুধু চলতি বছরের প্রথম তিন মাসের চিত্র টানলে দেখা যাচ্ছে আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণ কিছুটা কমছে। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে ২০ ফুট দীর্ঘ এক লাখ ৫২ হাজার ৪০২ কনটেইনার আমদানি পণ্য এলেও পরের দুই মাসে এসেছে যথাক্রমে এক লাখ ৩২ হাজার ৫৬০ ও এক লাখ ২০ হাজার ৮৪৬টি। আবার চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এক লাখ ৩৩ হাজার ৫৭৭ টিইইউএস রপ্তানি পণ্য গেলেও ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে গেছে যথাক্রমে এক লাখ ৯ হাজার ৩৮০ ও এক লাখ ১৮ হাজার ২৭২ টিইইউএস।
বন্দরের পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম জানান, এখন যেসব জাহাজ আসছে, সেগুলোর এলসি খোলা হয়েছিল আগে। এখনকার এলসির পণ্য আসবে এক থেকে দুই মাস পরে। তবে আগের এলসিতে যেসব জাহাজ এসেছে, সেগুলো দ্রুততম সময়ে হ্যান্ডেল করতে পেরেছি আমরা। চট্টগ্রাম বন্দরের বহরে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম যুক্ত হওয়ায় করোনার প্রভাব সেভাবে পড়েনি এখানে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি নতুন 'কী গ্যান্ট্রিক্রেন' যুক্ত হয়েছে বন্দরে। স্ট্রাডল ক্যারিয়ার ও ফর্ক লিফটও এসেছে পর্যাপ্ত। এ কারণে বেড়েছে বন্দরে কাজের গতি। করোনার কারণে শ্রমিক উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও যন্ত্রপাতি দিয়ে সেটি সামাল দিতে পেরেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। কী গ্যান্ট্রিক্রেন বন্দরে কনটেইনার ওঠানামার কাজে গতি এনেছে ব্যাপক হারে। এ জন্য আগের বছরের তুলনায় এবার জাহাজের গড় অপেক্ষমাণ সময়ও কমছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে প্রতিটি কনটেইনার জাহাজে গড় অপেক্ষমাণ সময় ছিল দুই দশমিক ৬২ দিন।
মন্তব্য করুন