ঘড়ির কাঁটা বিকেল ৫টা পেরিয়ে ১৫ মিনিট। মাগুরা কলেজ রোডে ইফতার নিয়ে দাঁড়িয়ে কয়েকজন তরুণ। কিছুক্ষণ পর পর রিকশাচালক ও পথচারীরা দাঁড়িয়ে তাদের কাছ থেকে ইফতার কিনে নিচ্ছেন। প্রতিটি ইফতারের প্যাকেটের জন্য ক্রেতাকে পরিশোধ করতে হচ্ছে এক টাকা। সোমবার থেকে মাগুরা শহরে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এ কার্যক্রম শুরু করেছে শহরের একদল তরুণ। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নিয়েছে তারা। 

উদ্যোক্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ফেসবুকে মাগুরা করোনাযোদ্ধা নামে সংগঠনের ব্যানারে এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে মাগুরা শহরে প্রতিদিন অন্তত ১০০ জনের হাতে ইফতার তুলে দেওয়া হচ্ছে। সামর্থ্য অনুযায়ী ধাপে ধাপে এই সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। প্রতিটি ইফতার প্যাকেটে রয়েছে সবজি খিচুড়ি ও মুরগির মাংস। 

এই কার্যক্রমের সমন্বয়কদের একজন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মীর মেহেদী হাসান রুবেল বলেন, সাংগঠনিকভাবে আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম করছি। আবার সামাজিক বিভিন্ন প্লাটফর্মের সাথে আমরা মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। এটা সামাজিক কাজের একটি অংশ। কিন্ত এটাকে যেন কেউ ত্রাণ বা দয়া মনে না করে তাই এর ন্যূনতম একটি দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ এই ইফতার যে নিচ্ছেন তিনি কিনেই নিচ্ছেন। ফলে যেটা হয়েছে অনেক নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষরা হয়তো খাবার বা সহযোগীতার জন্য লাইনে দাঁড়াতে পারেন না, তারাও সম্মানের সাথে এক টাকার ইফতার কিনতে পারছেন।

এই উদ্যোগের মূল পরিকল্পনাকারী  ঢাকাস্থ মাগুরা সদর উপজেলা সমিতির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আসিফ হাসান শাকিল জানান, চলমান দুর্যোগ শুরুর পর থেকেই ফেসবুকে মাগুরার করোনাযোদ্ধা নামে একটি গ্রুপ খুলে সংগঠিত হয়েছেন তারা। এরপর নিজেদের পাশাপাশি বন্ধু ও  পরিচিতজনদের সহযোগিতায় তিন দফায় প্রায় ৩০০ পরিবারের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন তারা। এছাড়া ভায়নাসহ শহরের কয়েকটি কাঁচা বাজারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবান বিতরণের পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন এলাকায় জীবাণুনাশক স্প্রে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আসিফ হাসান শাকিল বলেন, এই সময়ে যেহেতু আমাদের অফিসের কোনো কার্যক্রম নেই তাই সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। করোনা সংকট যতদিন থাকবে ততদিন স্বল্প পরিসরে হলেও মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করবেন তারা।

সোমবার বিকেলে ইফতার কার্যক্রম পরিচালনার সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য হ্যাপি খান, রাজিব শিকদার, আব্দুল্লাহ তারেক, তামান্না ফেরদৌস, কাজী ফারজানা ঝুমুর, নাজিরআহমেদ, ওয়াহিদুর চঞ্চল, রাশেদুজ্জামান রনি,মীর রাশেদুল হক প্রমুখ।