ঢাকা বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩

চলনবিলে বন্যায় আমন ধান ও সবজির ক্ষতি

চলনবিলে বন্যায় আমন ধান ও সবজির ক্ষতি

চলনবিলে তলিয়ে গেছে আমন ধানের ক্ষেত। ছবি: সমকাল

সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৩ | ১০:১৩ | আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৩ | ১০:১৩

অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে নাটোরের সিংড়ার চলনবিলে তলিয়ে গেছে আমন, মাষকলাই ও সবজিক্ষেত। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে ধান ঘরে তোলার কথা থাকলেও পানিতে তলিয়ে গেছে প্রায় আড়াই হাজার কৃষকের স্বপ্ন।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, সিংড়ার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে আটটির আমন ধান পানির নিচে রয়েছে। ছয়টির সবজি ও মাষকলাই ডুবে গেছে। এক সপ্তাহে বন্যার পানিতে তলিয়েছে অন্তত দেড় হাজার হেক্টর জমির ধান। পুরোপুরি নষ্ট হয়েছে ৪৯২ হেক্টর জমির ফসল। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিদিনই ডুবছে নতুন নতুন ক্ষেত। ক্ষতি নিরূপণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।

স্থানীয় এমপি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও করণীয় বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পাশে থাকতে উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, কৃষি, মৎস্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

চৌগ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক তফিকুল ইসলাম জানান, অনেক টাকা খরচ করে ধান লাগানোর পর বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এতে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি। গোয়ালবাড়িয়ার ইউনুস সরকার জানান, ৮০ বিঘা জমিতে আমন রোপণের পাঁচ-ছয় দিনের মধ্যে তলিয়ে গেছে। প্রতি বিঘায় পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা খরচ হয়েছে তাঁর।

এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আমনের চারা রোপণ করেন বড়িয়া গ্রামের কৃষক শহিদুল রাজ। তাঁরও সব ডুবে গেছে। আট বিঘা জমিতে ধান লাগাতে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তাঁর। শালিখা গ্রামের হাফিজুর রহমান জানান, এক বিঘা জমির সবজিসহ মাষকলাই ও ডাঁটা চাষ করেছিলেন। বৃষ্টির কারণে ক্ষতির শিকার হয়েছেন তিনি।

ভোগা গ্রামের তৈয়ব আলীর তিনটি পুকুরের মধ্যে একটি তলিয়ে গেছে। এতে রুই, সিলভার কার্প, ট্যাংরাসহ সাত প্রজাতির মাছ ছিল। তাঁর দাবি, বৃষ্টি আর উজানের ঢলে এক রাতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে।

চৌগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম ভোলা বলেন, বৃষ্টি ও বন্যায় ইউনিয়নের স্থাপনদীঘি, গোয়ালবাড়িয়া, পাড়েরাসহ কয়েকটি এলাকার ধান তলিয়ে গেছে। এতে ১২ শতাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের তালিকা করা হচ্ছে। ছাতারদীঘি ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রউফ বাদশা জানান, তাঁর ইউনিয়নে পাঁচ শতাধিক কৃষকের ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদৎ হোসেন বলেন, পানি আরও বাড়লে অনেক পুকুর ডুবে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। মৎস্যচাষিদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার ফরিদ বলেন, উপজেলায় ২৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আমনের চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে। এ ধান পানির নিচে চার-পাঁচ দিন টিকতে পারে। তবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ক্ষতি বেশি হবে।

আরও পড়ুন