- সারাদেশ
- সিলেটে ত্রাণ বিতরণে ‘বঞ্চনার’ প্রতিবাদ ঠেকাতে রাতে নারী কাউন্সিলরের বাসা ঘেরাও
সিলেটে ত্রাণ বিতরণে ‘বঞ্চনার’ প্রতিবাদ ঠেকাতে রাতে নারী কাউন্সিলরের বাসা ঘেরাও

নারী কাউন্সিলরের বাসা ঘেরাওয়ের পর বাকবিতণ্ডা হয়
সিলেট নগরীতে সরকারি ত্রাণ বিতরণে ‘বঞ্চনার’ প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণার পর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলরের বাসা ঘেরাওয়ের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার রাত ১২টার দিকে নগরীর শেখঘাট এলাকায় সংরক্ষিত ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর মাসুদা সুলতানা সাকির বাসা ঘেরাও করা হয়। এসময় বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় নগর ভবনের সামনে ৯ জন নারী কাউন্সিলরের অবস্থান কর্মসূচিতে তাকে যেতে নিষেধ করা হয়।
সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) উদ্যোগে সরকারি ত্রাণ বিতরণে তাদের সম্পৃক্ত না রাখা, মেয়র ও কতিপয় কাউন্সিলের বিরুদ্ধে অনিয়ম-স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেন নারী কাউন্সিলররা। এর প্রতিবাদে কর্মসূচি ঘোষণা করেন প্যানেল মেয়র ও সংরক্ষিত ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট রোকসানা বেগম শাহনাজ। গত ৪ মে সমকাল-এ ‘সিলেটে ত্রাণ বিতরণ প্রশ্নবিদ্ধ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কাউন্সিলর মাসুদা সুলতানা নিজে বাসা ঘেরাও ও তাকে কর্মসূচিতে যেতে বাধা দেওয়ার ঘটনা লাইভ করেন। এসময় আগত অর্ধশতাধিক যুবকদের বলতে শোনা যায়, ‘আপনি আন্দোলনে গেলে সিটি করপোরেশনের বরাদ্দ বাতিল হয়ে যেতে পারে।’ তাই এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার নগর ভবনে যেতে নিষেধ করেন বাসা ঘেরাওকারী যুবকরা।
নারী কাউন্সিলর মাসুদা সুলতানা তাদের অনুরোধে সাড়া না দেওয়ায় যুবকদের সঙ্গে তার দীর্ঘ সময় বাকবিতন্ডা হতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে এলাকার কিছু মুরব্বীরা আসলে মাসুদা সুলতানাকে কঠোরভাবে নিষেধ করে বাসা ঘেরাওকারী যুবকরা বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে চলে যায়।
এ ব্যাপারে নারী কাউন্সিলর মাসুদা সুলতানা বলেন, বিষয়টি এখন পরিষ্কার। আন্দোলনের ডাক দেওয়ার পরই মধ্যরাতে পরিকল্পিতভাবে আমার বাসায় হানা দেওয়া হয়েছে।
মধ্যরাতে এমন নাটকীয়তা মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নির্দেশে হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, আন্দোলনের ডাক যখন দেওয়া হয়েছে, আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার আগ পর্যন্ত এই রাস্তা থেকে সরে আসব না।
করোনার সংকটময় সময়ে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নগরবাসীর সহায়তায় প্রথমে ‘খাদ্য ফান্ড’ গঠন করেছিলেন। সেই ফান্ডে সরকারের পাশাপাশি প্রবাসী, নগরীর বিত্তবান ও ব্যবসায়ীরা নগদ টাকা ও খাদ্যসামগ্রী দিয়েছিলেন। এক দফা নগরীর প্রায় ৭০ হাজার পরিবারকে চাল, ডাল,তেল, লবণ, সাবান দেওয়ার পর খাদ্য ফান্ডের কার্যক্রম থমকে যায়। বর্তমানে সরকারের বরাদ্দ করা চালেই চলছে সিসিকের ত্রাণ কার্যক্রম। এই কার্যক্রম নিয়ে সিসিকের কাউন্সিলরদের মধ্যেই অসন্তোষ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্যানেল মেয়র ও নারী কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট রোকসানা বেগম বলেন, আমরা বাধ্য হয়ে অবস্থান কর্মসূচি দিয়েছি। এরপর অবস্থা বুঝে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ সহায়তার অংশ হিসেবে নগরীর ৪০ হাজার মানুষকে রমজানে উপহার দেবেন। এ সংক্রান্ত সভায়ও আমাদের বলা হয়নি। এখন শুনছি, নগরীর ২৭ ওয়ার্ডেও প্রত্যেক সাধারণ কাউন্সিলর তাদের ওয়ার্ডের জন্য এক হাজার করে বরাদ্দ পাবেন। বাকি ১৩ হাজার থাকবে মেয়রের অধীনে।
মেয়রের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করে তিনি বলেন, এখানেও তিনি নারী কাউন্সিলরদের বঞ্চিত করছেন।
এ ব্যাপারে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি কল ধরেননি।
মন্তব্য করুন